ওষুধ পরীক্ষার মান নিয়ে ভারতের গবেষণাগারকে ফের দুষল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। চেন্নাই ভিত্তিক মাইক্রো থেরাপিউটিক রিসার্চ ল্যাবস-এর পরীক্ষা-নিরীক্ষার মান ‘নির্ভরযোগ্য’ নয় বলে অভিযোগ তুলেছে ইউরোপের ওষুধ নিয়ন্ত্রক ইউরোপিয়ান মেডিসিন্স এজেন্সি (ইএমএ)। আর, তার ভিত্তিতেই তারা ইউরোপে ভারতের প্রায় ৩০০টি ওষুধ বিক্রি স্থগিত রাখার সুপারিশ করেছে।
প্রসঙ্গত, গত ২০১৫ সালেও জিভিকে বায়োসায়েন্সেস-এর করা পরীক্ষার মান নিয়ে এই ধরনের অভিযোগ তুলে ভারত থেকে আসা ৭০০টি জেনেরিক ওষুধের বিক্রি বন্ধ করেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
এ যাত্রায় ইএমএ-র কোপে পড়তে পারে অরবিন্দ ফার্মা, জাইডাস, স্যান্ডোজ, স্যানোফি-র মতো সংস্থা। তালিকায় রয়েছে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা, ব্যথা কমানোর মতো অতি প্রয়োজনীয় ওষুধ। ইএমএ-র সুপারিশ এ বার পাঠানো হবে ইউরোপীয় কমিশনকে, যাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন জুড়ে এগুলি বিক্রির উপর আইনি নিষেধাজ্ঞা জারি করা যায়। তবে এ নিয়ে মাইক্রো থেরাপিউটিক-এর কোনও বক্তব্য পাওয়া য়ায়নি।
ইএমএ তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, চেন্নাইয়ের গবেষণাগার মাইক্রো থেরাপিউটিক ভারতে দু’টি জায়গায় ওষুধগুলির উপর যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছে, তার ভিত্তিতেই এই সুপারিশ।
যে-সব গবেষণাগারকে এ ধরনের বিশ্লেষণ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেই তালিকাতেই রয়েছে চেন্নাইয়ের ওই ল্যাব, যাদের বলা হয় কনট্রাক্ট রিসার্চ অর্গানাইজেশন (সিআরও)। ৩০০টি ট্যাবলেট ও ক্যাপসুলের জেনেরিক বা মূল ওষুধের মান পরীক্ষাতেই পাশ করতে পারেনি ওই ল্যাব। ‘বায়োইকুইভ্যালেন্স টেস্ট’ বা ওষুধের এই গুণমান পরীক্ষায় একটি মাপকাঠি ধরে নিয়ে তার সঙ্গে তুলনা করে দেখা হয়, সংশ্লিষ্ট জেনেরিক ড্রাগটিতে কোনও গরমিল রয়েছে কি না। ইএমএ জানিয়েছে, ওই গবেষণাগার যে-ভাবে বিশ্লেষণের জন্য তথ্য সংগ্রহ করেছে এবং তা বিশ্লেষণ করেছে, তাতে তারা উদ্বিগ্ন। সেই কারণেই ওষুধগুলিকে ইউরোপের বাজারে প্রবেশের ছাড়পত্র দিতে পারেনি তারা। অস্ট্রিয়া ও নেদারল্যান্ডস-এর সংশ্লিষ্ট মহলও ওই ল্যাবটিকে নিয়ে আগে উদ্বেগ জানায়।
তবে ওষুধগুলির কার্যকারিতা কম বা সেগুলি ক্ষতিকারক— এমন প্রমাণ এই পরীক্ষা থেকে মেলেনি। ইএমএ-ও জানিয়েছে, ভারত থেকে ইউরোপের আমদানি করা ওই সব ওষুধের অনেকগুলিই অত্যন্ত জরুরি। তাই রোগীদের স্বার্থে এই কড়াকড়ি চাইলে পিছোতে পারে ইউরোপ।