ফাইল চিত্র।
ভোগ্যপণ্যের ব্যবসার বহর বাড়ল। কিন্তু তা শিল্পের পক্ষে ভাল বার্তা বয়ে আনল না। কারণ ক্রেতার কেনাকাটায় ভর করে নয়, ব্যবসা বেড়েছে চড়া মূল্যবৃদ্ধির জন্য। একটি সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, মাত্রাছাড়া মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাস্তবে বরং বাজারে ভোগ্যপণ্যের কেনাকাটা কমেছে, বিশেষত প্যাকেটবন্দি খাবার ও অত্যাবশ্যক পণ্যের। যাঁরা কিনছেন, তাঁদের অনেকেই মূল্যবৃদ্ধির আঁচ থেকে বাঁচতে ঝুঁকছেন ছোট প্যাকেটের দিকে। যা চিন্তায় রাখছে এই শিল্পকে। উদ্বেগ বাড়িয়ে সমীক্ষা দেখিয়েছে, গ্রামীণ অর্থনীতির অবস্থা এখনও নড়বড়ে। সেখানে ভোগ্যপণ্যের ব্যবসা ধাক্কা খেয়েছে সব থেকে বেশি।
গত জানুয়ারি-মার্চে ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছিল বিশ্লেষক সংস্থা নিয়েলসন আইকিউ। বুধবার তাদের প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, গত বছরের থেকে এ বার ব্যবসা বেড়েছে ৬%। কারণ জিনিসের চড়া দাম। অথচ সে জন্যই ধাক্কা খেয়েছে বিক্রি। গ্রামে ভোগ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ১১.৯%। শহরে ৮.৮%।
সমীক্ষা বলছে, খাবারের ক্ষেত্রে ওই তিন মাসে বিক্রি কমেছে ১.৮%। অন্যান্যগুলির আরও বেশি, ৯.৬%। চানাচুর বা চিপসের মতো নোনতা মুখোরোচক পণ্য হোক বা চকোলেট কিংবা বিস্কুট, খরচ বেশি হওয়ার ভয়ে ক্রেতারা বেশি কিনছেন ছোট প্যাকেট। বিভিন্ন ধরনের ভোজ্য তেল, বনস্পতি, প্যাকেটজাত আটার মতো খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি প্রায় ১৫%। বিক্রি কমায় ভোগ্যপণ্যের বহু ছোট সংস্থা পণ্যের দাম বাড়াতে না পেরে বন্ধ হয়েছে।
নিয়েলসনের সোনিকা গুপ্ত বলেন, ‘‘এটা স্পষ্ট যে ক্রেতারা চাপ সামলাতে খাবার ও অন্যান্য পণ্যেরছোট প্যাকেটের দিকে ঝুঁকেছেন। সংস্থাগুলিকেও তা মাথায় রেখে প্যাকেট তৈরি করতে হবে।’’ সংস্থাটির ভারতীয় শাখার এমডি সতীশ পিল্লাই বলেন, ‘‘গত বছর থেকেই দেশের সার্বিক অর্থনীতির অবস্থা ক্রেতার কেনাকাটায় প্রভাব ফেলছে। বিশেষত খাদ্য ও জরুরি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির আঁচ তাঁরা ভাল রকম টের পাচ্ছেন।’’
পাড়ার ছোটখাটো মুদি দোকানের মতো বিপণন ক্ষেত্রের ব্যবসা কমেছে প্রায় ৫%। তবে সুপার মার্কেটের মতো আধুনিক পরিকাঠামোর বাজার, যেগুলি ‘মডার্ন ট্রেড’ ব্যবস্থা বলে পরিচিত, তাদের বেড়েছে ৫ শতাংশের বেশি। তবে নিয়েলসন কর্তাদের মতে, কেন্দ্রের উদ্যোগের পাশাপাশি ভাল বর্ষা এই ব্যবসার পক্ষে সহায়ক হবে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।