সিদ্ধান্ত হয়েছিল সংস্থার ক্ষতি কমানোর ক্ষেত্রে যে সমস্ত কর্মী দক্ষতার পরিচয় দেবেন, তাঁদের উৎসাহ ভাতা দেওয়া হবে। যোগ্য কর্মীদের বাছাই করার জন্য শীর্ষকর্তাদের মাথায় রেখে ১০ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করেছিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। সূত্রের খবর, সংস্থা কর্তৃপক্ষ সে পরিকল্পনা আপাতত ‘ফাইলবন্দি’ রাখারই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে স্বাভাবিক ভাবেই হতাশ কর্মীরা।
কেন স্থগিত করে দেওয়া হল সিদ্ধান্ত? বিদ্যুৎ কর্তারা এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি। তবে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে শীর্ষ স্তরে আরও আলোচনার প্রয়োজন আছে। তাই আপাতত কিছু করা হচ্ছে না।
বিদ্যুৎ পরিষেবা দিতে গিয়ে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এখন ক্ষতি হয় গড়ে প্রায় ২৮-৩০%। কোনও কোনও গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের তা আরও বেশি। গত কয়েক বছরে গ্রামীণ বিদ্যুদয়নের ফলে বণ্টন সংস্থার গ্রাহক সংখ্যা অনেক বেড়েছে। পরিষেবার পরিসর বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে ক্ষতির বহরও। আবার ক্ষতির হার নির্দিষ্ট মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ায় সহজ শর্তে কেন্দ্রীয় ঋণ পাওয়া থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে সংস্থাটি। কারণ, কেন্দ্রের শর্তই হচ্ছে ক্ষতির হার থাকতে হবে ১৫ শতাংশের মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ সংবহন ও বাণিজ্যিক ক্ষতি (এটিসি লস) কমানোর উপরে জোর দেওয়া হয়। আর সে কাজে উৎসাহ দিতেই দক্ষ কর্মীদের ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। বিদ্যুৎ কর্তাদের যুক্তি ছিল, ক্ষতির হার ১% কমাতে পারলে বণ্টন সংস্থার কমপক্ষে ৬০-৮০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। ফলে আর্থিক সুবিধা দিতে সমস্যা হবে না।
সেই অনুযায়ী শীর্ষকর্তারা গত সেপ্টেম্বরে জানিয়ে দেন, প্রথম ধাপে ৭% হারে ক্ষতি কমাতে হবে। তবে এ-ও জানানো হয় যে, লক্ষ্যপূরণ না- হলে আর্থিক ভাতার প্রসঙ্গটি না-ও ভাবা হতে পারে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, লক্ষ্যের ধারে কাছে পৌঁছানো যাচ্ছে না বলেই কি উৎসাহ ভাতা কার্যকর না-করার সিদ্ধান্ত? সে উত্তর অবশ্য বিদ্যুৎ ভবনে মেলেনি। কোনও মন্তব্য করেননি বিদ্যুৎমন্ত্রীও।