প্রতীকী ছবি।
পেট্রল-ডিজেলের দর আমজনতার স্বস্তি কাড়লেও, উৎপাদন শুল্ক কমিয়ে সুরাহা দেওয়া নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করছে না কেন্দ্র। উল্টে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর নেতা-মন্ত্রীরা কখনও কাঠগড়ায় তুলছেন বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দামকে, কখনও ইউপিএ সরকারের আমলে আমদানি বৃদ্ধিকে, কখনও আবার রাজ্যের চাপানো করকে। এই অবস্থায় এক রিপোর্টে আর্থিক বিষয়ের বিশ্লেষকদের দাবি, এই মুহূর্তে চাইলে দুই জ্বালানিতেই লিটার পিছু ৮.৫০ টাকা পর্যন্ত শুল্ক ছাঁটাই করতে পারে কেন্দ্র। তাতে সরকারের আয় ধাক্কা খাবে না। বাজেটে স্থির হওয়া রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও কোনও সমস্যা হবে না।
সরকার অবশ্য শুল্ক প্রসঙ্গে চুপই। উল্টে সরকারি সূত্রের দাবি, ৩১ মার্চের আগে উৎপাদন শুল্ক ছাঁটাই করা মুশকিল। যদি আগামী দিনে তা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়াও হয়, তবে তা হতে পারে নতুন অর্থবর্ষে, অর্থাৎ ২০২১-২২ সালে পা রাখার পরে। তবে তার আগে এমনিই দাম কমতে পারে। সরকারি সূত্র আগেই জানিয়েছে, যে ভাবে এর আগে কর্নাটক-সহ একাধিক রাজ্যে ভোটের মুখে ‘কাকতালীয় ভাবে’ তেলের দাম কমেছিল, এ বার পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের মুখেও সে ভাবেই বেলাগাম তেল ও গ্যাস দাম কমার সম্ভাবনা।
এরই মধ্যে আইসিআইসিআই সিকিউরিটিজ়ের দাবি, উৎপাদন শুল্ক ছাঁটাই করেও পেট্রল-ডিজেলের দাম কমানোর উপায় রয়েছে। তাদের হিসেবে, বাজেটে ২০২১-২২ সালে শুল্ক থেকে ৩.২ লক্ষ কোটি টাকা আয়ের প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্র। শুল্ক না-কমলে আয় হবে ৪.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা। তাই শুল্ক লিটার পিছু সাড়ে আট টাকা করে কমালেও বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব।
তেলের দর অবশ্য ক’দিন ধরে থমকে। তবে তা যেখানে উঠেছে, তাতে দাম না-কমা পর্যন্ত সাধারণ মানুষ ও শিল্পের স্বস্তি নেই। কেন্দ্রের কাছে যতবার শুল্ক ছাঁটাইয়ের (মোদী সরকারের জমানায় যা বিপুল বেড়েছে) দাবি উঠছে, পাল্টা মন্ত্রীরা রাজ্যগুলিকেও ভ্যাটের হার কমাতে নিরন্তর বার্তা দিচ্ছেন। বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল ও পেট্রল-ডিজেলের চড়া দরের জন্যই দেশের বাজারে তার প্রভাব পড়ার কথা বারবার বলছেন। যদিও গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত অশোধিত তেল ব্যারেলে প্রায় চার ডলার কমেছিল।