Business News

বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার প্রভাব বেশি প্রকট ভারতে, বললেন নয়া আইএমএফ প্রধান

ক্রিস্টিন ল্যাগার্দের উত্তরসূরি হিসেবে দু’মাস আগেই দায়িত্ব নিয়েছেন ক্রিস্টালিনা জর্জিভা। কিন্তু জর্জিভা এমন একটা সময়ে দায়িত্ব নিয়েছেন, যখন বিশ্ব অর্থনীতি সঙ্কটের মুখে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৯ ১০:৪২
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

ভারতীয় অর্থনীতির গতি যতটা নিম্নমুখী ভাবা গিয়েছিল, প্রকৃত অবস্থা কি তার চেয়েও খারাপ? সেই ইঙ্গিতই মিলল ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড (আইএমএফ) বা আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের নয়া ম্যানেজিং ডিরেক্টর ক্রিস্টালিনা জর্জিভার কথায়। বিশ্ব অর্থনীতিতে ধীরগতির প্রভাব ভারতে ‘বেশি প্রকট’ বলে মন্তব্য করলেন আইএমএফ প্রধান।শুধু তাই নয়, ভারতের মতো দেশে এই মন্দা যে আরও বেশ কিছুদিন চলবে, তারও পূর্বাভাস দিয়েছেন জর্জিভা।

Advertisement

দু’দিন আগেই স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান রজনীশ কুমার বলেছিলেন, মন্দার ধাক্কা কাটিয়ে ভারত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। উৎসবের মরশুম পড়তেই অর্থনীতি চাঙ্গা হতে শুরু করেছে। কিন্তু এসবিআই চেয়ারম্যানের সেই তত্ত্ব কার্যত খারিজ করে সদ্য দায়িত্ব নেওয়া আইএমএফ প্রধান বললেন, মন্দার প্রভাব আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে। বিশ্বের ৯০ শতাংশ দেশেই ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হার আরও নিম্নমুখী হবে। ভারতে সেই হার হবে আরও বেশি নিম্নগতির।

ক্রিস্টিন ল্যাগার্দের উত্তরসূরি হিসেবে দু’মাস আগেই দায়িত্ব নিয়েছেন ক্রিস্টালিনা জর্জিভা। কিন্তু জর্জিভা এমন একটা সময়ে দায়িত্ব নিয়েছেন, যখন বিশ্ব অর্থনীতি সঙ্কটের মুখে। তাই আইএমএফ-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে তাঁর প্রথম ভাষণেও উঠে এসেছে সেই শঙ্কার বার্তাই। জর্জিভা বলেন, “দু’বছর আগেও বিশ্ব অর্থনীতিতে একটা সুসংহত বৃদ্ধি ছিল। বিশ্বের ৭৫ শতাংশ দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু এখন অর্থনীতি সমান তালে নিম্নমুখী। ২০১৯ সালের মধ্যেই বিশ্বের ৯০ শতাংশ দেশে বৃদ্ধির হার কমবে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: পর্যটনে কি ছাড় ভূস্বর্গে? কমবে কড়াকড়ি? খুলবে দোকানপাট? উত্তর সময়ের গর্ভেই

গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থার একটা চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের প্রধান। বলেন, ‘‘আমেরিকা, জার্মানিতে বেকারত্ব ঐতিহাসিক ভাবে বেড়েছে। এমনকি, আমেরিকা-জাপান, ইউরো জোনের মতো মজবুত অর্থনীতির দেশেও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি মন্থর। আবার ভারত, ব্রাজিলের মতো বৃহত্তম উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলিতে এই মন্দা আরও প্রকট হবে।’’ এই প্রভাব গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ হতে পারে এবং তার ফলও সুদুর প্রসারী হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জর্জিভা।

গত ছ’বছরের তুলনায় ভারতে জিডিপি বৃদ্ধির হার সবচেয়ে কমে নেমে এসেছে ৫ শতাংশে। এই পরিস্থিতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সম্প্রতি সম্ভাব্য বৃদ্ধির হার ৬.৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬.১ শতাংশ করেছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের হিসেবে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে সেই হার নেমে যেতে পারে ০.৩ শতাংশে। কারণ আইএমএফ-এর মতে ‘যা আশা করা গিয়েছিল, তার চেয়েও দুর্বল’ ভারতের অর্থনীতি।

আরও পড়ুন: বিতর্কের সেই রাফাল এই প্রথম হাতে পেলেন রাজনাথ

অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও মন্দার প্রভাব পড়েছে। তার সঙ্গে আমেরিকা-চিন, ইরান-আমেরিকা, ভারত-মার্কিন শুল্ক যুদ্ধও তাতে ইন্ধন জুগিয়েছে। সেই উদ্বেগও ধরা পড়েছে আইএমএফ প্রধানের বক্তব্যে। বর্তমানে ‘স্থিতাবস্থা’ বলে মন্তব্য করেছেন জর্জিভা। একই সঙ্গে বলেন, এই যুদ্ধে ‘সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে’। তাই সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বানও জানিয়েছেন আইএমএফ প্রধান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement