— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ইরান এবং ইজ়রায়েলের মধ্যে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় সোনার দাম যেমন নজির গড়ছে, তেমনই ভারত-সহ বিশ্ব জুড়ে তিন দিন ধরে পড়ছে শেয়ার বাজার। নামছে ডলারের সাপেক্ষে টাকার দরও। এই ক’দিনে দেশে সেনসেক্স নেমেছে ২০৯৪.৪৭ পয়েন্ট। বিএসই-র লগ্নিকারীরা ৭.৯৩ লক্ষ কোটি টাকা হারিয়েছেন। তিন দিনে নিফ্টির পতন ৬০৫.৯০ পয়েন্ট। মঙ্গলবার সূচক দু’টি থেমেছে যথাক্রমে ৭২,৯৪৩.৬৮ ও ২২,১৪৭.৯০ অঙ্কে। লগ্নিকারীদের শেয়ার বিক্রির জেরে ডলারের চাহিদা বৃদ্ধি বিভিন্ন দেশের মুদ্রার সাপেক্ষে ঠেলে তুলেছে তার দামকে। মঙ্গলবার ভারতে প্রতি ডলার ১৭ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৮৩.৬১ টাকা। ছুঁয়েছে গত ২২ মার্চের নজির।
এমনিতেই আমেরিকায় মূল্যবৃদ্ধি মাথাচাড়া দেওয়ায় সেখানে সুদ ছাঁটাইয়ের সম্ভাবনা কমেছে। তার উপরে ইজ়রায়েলের হুমকি, ইরানের করা প্রায় ৩০০টি ড্রোন ও ক্ষেপনাস্ত্র হামলার উত্তর দেবে তারা। যা সত্যি হলে যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা করেছে মূলধনী বাজার। সেই আশঙ্কা থেকে গত তিন দিনে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি ভারতের বাজারে ১৫,৭৬৩ কোটি টাকার শেয়ার বেচেছে। তবে মিউচুয়াল ফান্ড-সহ দেশীয় আর্থিক সংস্থাগুলি কিনেছে ১৩,১৪৪.৭৪ কোটির। যা সূচকের আরও পতন রুখেছে। এর মধ্যে আশার কথা আমেরিকা-সহ কিছু দেশে ইজ়রায়েলকে পাল্টা সামরিক পদক্ষেপ না করার জন্য অনুরোধ করেছে। এখন তারা সেটা মানে কি না, সে দিকেই নজর সকলের।
সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মতে, তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি বিদেশে ব্যবসা করায় এ দিন তাদের দাম পড়েছে সবচেয়ে বেশি। তবে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে ব্যারেলে ৯০ ডলারের নীচে রয়েছে অশোধিত তেলের দাম। সব মিলিয়ে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা না কমা পর্যন্ত মূলধনী বাজারে স্থিতিশীলতা আসার সম্ভাবনা কম। তবে নতুন করে অবস্থার অবনতি না হলে আগামিকাল, বৃহস্পতিবার সূচক ঘুরে দাঁড়াতে পারে। বাজার বিশেষজ্ঞ কমল পারেখের মতে, ‘‘বাজার এতটা পড়ায় কম দামে ভাল শেয়ার কেনার সুযোগ এসেছে। যা অনেকেই নেবেন বলে ধারণা।’’
যদিও অন্য অংশ বলছে, আমেরিকায় ১০ বছরের বন্ডের প্রকৃত আয় (ইল্ড) হয়েছে ৪.৬%। দুর্বল দেশীয় বাজার ও ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা রয়েইছে। ফলে ডলার-টাকার বিনিময়মূল্য ও শেয়ার সূচক ক’দিন অস্থিরই থাকার সম্ভাবনা।