প্রতীকী ছবি।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে টেলিকম সংস্থাগুলির ‘অ্যাডজাস্টেড গ্রস রেভিনিউ’ (এজিআর) ও তার ভিত্তিতে তাদের বকেয়া স্পেকট্রাম ও লাইসেন্স ফি-র হিসেব কষেছিল টেলিকম দফতর (ডট)। কিন্তু কয়েকটি সংস্থা নিজস্ব মূল্যায়নের যে হিসেবে বকেয়া মিটিয়েছে, তা ডটের হিসেবের ধারেকাছেও নয়। এই বিপুল ব্যবধান নিয়ে আগেই বিতর্ক জোরালো হওয়ার আশঙ্কায় ছিল সংশ্লিষ্ট মহল। এ বার সেই ব্যবধান নিয়ে প্রশ্ন তুলে দু’একদিনের মধ্যেই সংস্থাগুলিকে ডট চিঠি পাঠাবে বলে সূত্রের খবর।
এজিআরের সংজ্ঞা ও তার ভিত্তিতে ওই বকেয়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে ডটের যুক্তিকেই মান্যতা দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তবে সংস্থাগুলি জানিয়েছিল, সংজ্ঞা মানলেও তারা বকেয়ার নিজস্ব মূল্যায়ন করবে। ডট অবশ্য জানায়, সে ক্ষেত্রে উপযুক্ত নথি জমা দিতে হবে।
ডটের হিসেবে, এজিআর বাবদ এয়ারটেলের বকেয়া প্রায় ৩৫,০০০ কোটি টাকা। কিন্তু ১৩,০০০ কোটি মিটিয়ে সংস্থার দাবি, তারা পুরো বকেয়াই মিটিয়েছে। সঙ্গে এককালীন বাড়তি ৫,০০০ কোটিও জমা রেখেছে। তেমনই আবার ডটের হিসেবে টাটা টেলি সার্ভিসেসের বকেয়া প্রায় ১৪০০০ কোটি হলেও, তারাও ২১৯৭ কোটি দিয়েই পুরো টাকা মেটানোর দাবি করেছে। মঙ্গলবার অবশ্য সংস্থাটি এককালীন ২,০০০ কোটি বাড়তি জমা দিয়েছে। সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে তাদের হিসেবের সঙ্গে সংস্থাগুলির দাবির বিপুল ফারাক কেন, সেটাই চিঠিতে জানতে চায় ডট।
ভোডাফোন আইডিয়ার বকেয়া ৫৩,০০০ কোটি টাকা ধরা হলেও, এখনও পর্যন্ত তারা মিটিয়েছে ৩৫০০ কোটি। সংস্থাটির ভবিষ্যৎ নিয়েই সব চেয়ে বেশি জল্পনা চলছে। এ দিন ফের টেলিকম সচিব অংশু প্রকাশের সঙ্গে দেখা করেন সংস্থার শীর্ষকর্তা রবীন্দ্র টক্কর। তবে এ নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি। এর মধ্যে এ সপ্তাহেই ব্রিটেনে ভোডাফোনের সিইও নিক রিড ভারতে আসতে পারেন খবর। টেলিকমমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্যও তিনি সময় চেয়েছেন। যদিও এ দিন রাত পর্যন্ত তা চূড়ান্ত হয়নি। এ দেশে ভোডাফোনের ভবিষ্যৎ কোন পথে এগোবে, নিকের ভারত সফরের পরে তার কিছুটা দিশা মিলবে বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের।
এ দিকে, স্পেকট্রামের দাম দু’ভাবে দিতে হয় সংস্থাগুলিকে। শুরুতে দামের একাংশ এককালীন দেয় তারা। বাকিটা ১৮ বছর ধরে কিস্তিতে। এ দিন সেই কিস্তিও জমা দিয়েছে এয়ারটেল, রিলায়্যান্স জিয়ো ও ভোডাফোন। প্রসঙ্গত, কেন্দ্র টেলি শিল্পকে স্বস্তি দিতে দু’বছরের জন্য ওই কিস্তি মেটানো স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছে। তার আগে এটিই আপাতত শেষ কিস্তি।
এ দিকে মোবাইলে ডেটা পরিষেবায় বছর দুয়েকের জন্য ন্যূনতম মাসুল বাঁধতে ট্রাইয়ের কাছে আর্জি জানিয়েছে সংস্থাগুলির সংগঠন সিওএআই। তাদের দাবি, ভারতেই এই পরিষেবা সব চেয়ে সস্তা ও লাভজনক নয়। তবে মোবাইলে কথা বলায় এমন পদক্ষেপ দরকার নেই বলেও দাবি তাদের।