প্রতীকী ছবি।
আরএসএসের সদর দফতর যে শহরে, সেই নাগপুর ব্যতিক্রম। আর সামান্য হলেও মুখ রক্ষা করেছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের রাজ্য গুজরাতের আমদাবাদ। কিন্তু মুম্বই, দিল্লি, কলকাতা থেকে বেঙ্গালুরু, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ও বড় শহর ও তার সংলগ্ন এলাকা থেকে আয়কর, কর্পোরেট কর বাবদ সরকারের আয় গত বছরের তুলনায় অনেক কম। বাজেটের মাত্র ১০ দিন আগে এই খবরে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে অর্থ মন্ত্রকে।
সরকারের হিসেব বলছে, চলতি অর্থবর্ষে ১ এপ্রিল থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আয়কর, কর্পোরেট কর-সহ প্রত্যক্ষ কর বাবদ ৭.২৬ লক্ষ কোটি টাকা আয় হয়েছে। তার আগের বছর এই সময়ে তা ছিল ৭.৭৩ লক্ষ কোটি। অর্থাৎ এ বার ৬.১% কম। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের ব্যাখ্যা, অর্থনীতির ঝিমুনি যে কত ভয়ানক, তা এতে স্পষ্ট। কারণ, কোনও বছরে তার আগের বারের চেয়ে আয়কর-কর্পোরেট কর আদায় কমা সাম্প্রতিক অতীতে বিরল। প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ও তার সংলগ্ন অঞ্চল থেকে কর আদায় কমার অর্থ, কর্পোরেট সংস্থার রোজগার কমছে। কমছে বাসিন্দাদের আয়। অর্থনীতি চাঙ্গা করতে কর্পোরেট কর ছাঁটা হয়েছে সেপ্টেম্বরে। ফলে অক্টোবর-ডিসেম্বরে আদায় কম হয়েছে। জানুয়ারিতেও সেই ধারা অব্যাহত। তবে ওই সূত্রের দাবি, পাশাপাশি অর্থনীতির ঝিমুনিও এই কর আদায় কমার প্রধান কারণ।
আয়কর দফতরের কর্তারা বলছেন, আর একটি কারণ আয়কর কর্তাদের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ ওঠায় অর্থ মন্ত্রকের রাতারাতি ‘ফেসলেস ট্যাক্স অ্যাসেসমেন্ট’-এর সিদ্ধান্ত। যেখানে করদাতা ও আয়কর অফিসার, কেউ কাউকে চিনবেন না, মুখোমুখি হবেন না। কেউ কম কর জমা করলে অফিসাররা তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে জবাব চাইবেন না। পুরো প্রক্রিয়াই ই-মেল মারফত হবে। কর্তাদের মতে, প্রস্তুতি ছাড়া এই ব্যবস্থা আনায় রাজস্ব আদায় ধাক্কা খাচ্ছে।
চলতি অর্থবর্ষে প্রত্যক্ষ কর থেকে আয়ের লক্ষ্য ১৩.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা। গত বছরের চেয়ে ১৭.৫% বেশি। কিন্তু অর্থনীতির ঝিমুনি কাটাতে ছাঁটা হয়েছে কর্পোরেট কর। অর্থনীতির ঝিমুনির ঠেলায় এমনিতেই রাজস্ব আয় কম হচ্ছে। ফলে লক্ষ্যের তুলনায় প্রত্যক্ষ কর থেকে প্রায় ১.৫ লক্ষ কোটি আয় কমার আশঙ্কা ছিলই। এখন সেই ঘাটতি আরও বাড়বে কি না, তা নিয়ে আজ নতুন করে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এমনিতে রাজকোষ ঘাটতি যে এ বছরে ৩.৩ শতাংশের লক্ষ্যের মধ্যে রাখা যাবে না, তা নিয়ে সংশয় নেই। প্রত্যক্ষ কর আদায় এত কমায় সেই ঘাটতি কোথায় পৌঁছবে, প্রশ্ন সেটাই।