ফাইল চিত্র।
আশা-আশঙ্কাকে সঙ্গী করেই এই প্রথম শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত হল ডিজিটাল মুদ্রার (ক্রিপ্টোকারেন্সি) কোনও এক্সচেঞ্জ। বুধবার নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত হয়েছে কয়েনবেস গ্লোবাল। ২১ সেকেন্ড ধরে ঘণ্টা বাজিয়ে ন্যাসডাকে এল তারা। খবর অনুসারে, নথিভুক্তির সময়ে সংস্থার শেয়ারমূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯১০০ কোটি ডলার। গত সেপ্টেম্বরেও যা ছিল ৫৮০ কোটি। বিভিন্ন লগ্নিকারী সংস্থার মতে, এই ঘটনা বিটকয়েন-সহ বিভিন্ন ডিজিটাল মুদ্রার ব্যবহার বাড়াতে সাহায্য করবে। সাধারণের কাছে সেগুলিকে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলবে। তেমনই অন্য অংশের ধারণা, এই মুদ্রায় এখনও কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। তাই এতে ক্ষতির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বিভিন্ন দেশের সরকারও সতর্ক করছে। ফলে দেখে নিতে হবে ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজার কী রকম থাকে। সরকারই বা কী সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এই নথিভুক্তি যে মাইলফলক, তা মানছেন সকলেই।
২০০৮-০৯ সালের বিশ্ব মন্দা এবং তার পরবর্তী জমানায় প্রথম প্রচারে আসে এই ডিজিটাল মুদ্রা। সাতোশি নাকামোতোর এক প্রবন্ধে অবশ্য তারও আগে চেনা গিয়েছিল বিটকয়েনকে। তবে কে এই নাকামোতো, তা আজ পর্যন্ত জানা যায়নি। প্রথমে এক ব্যক্তির থেকে অন্য ব্যক্তির (পিয়ার-টু-পিয়ার) মধ্যে লেনদেন দিয়ে এর সূচনা হলেও, পরবর্তীকালে বাণিজ্যিক কাজেও তার ব্যবহার বাড়তে থাকে। বাজারে আসে আরও বহু ক্রিপ্টোকারেন্সি। সেই সঙ্গে ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের সরকার এবং শীর্ষ ব্যাঙ্কও এই ধরনের ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহার নিয়ে বারবার সতর্ক করেছে। ২০১৪-১৫ সালে জাপানে জালিয়াতির অভিযোগে বন্ধ হয় বিটকয়েন এক্সচেঞ্জ এমটি-গক্স। তবে
তার মধ্যেও থামেনি তার গতি। এমনকি কয়েনবেসের নথিভুক্তির খবরে তার দর ছুঁয়েছে ৬৪,০০০ ডলার, যা রেকর্ড।
সম্প্রতি গোল্ডম্যান স্যাক্স, মর্গ্যান স্ট্যানলির মতো ব্যাঙ্ক এবং আমেরিকার বৈদ্যুতিক গাড়ি সংস্থা টেস্লা পণ্য ও পরিষেবার খরচ মেটাতে ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহারে সায় দিয়েছে। ভারতে নিজস্ব ডিজিটাল মুদ্রা আনার কথা বিবেচনা করছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটা ঠিক যে এই ধরনের মুদ্রার প্রচলন বাড়ছে। তাতে ইন্ধন জোগাবে কয়েনবেসের নথিভুক্তি। তবে, নিয়ন্ত্রণ না-থাকা ও বিটকয়েনের মতো মুদ্রার দরের মতো ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদে নির্ভর করে কয়েনবেসের শেয়ারদর স্থির হওয়া সমস্যার বলে মত তাঁদের। যে কারণে বিটকয়েন দর কমলে কয়েনবেসের শেয়ারদরও পড়ার সম্ভাবনা। কয়েক বছর আগেই ২০,০০০ ডলারের গণ্ডি থেকে মাত্র ক’দিনের মধ্যে তাকে ধসে যেতে দেখা গিয়েছিল। ফলে এখনই এই নথিভুক্তি নিয়ে উচ্ছ্বাস দেখানো ঠিক নয় বলে মনে করছেন তাঁরা।