— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সবেমাত্র স্বস্তি দিতে শুরু করেছে বৃষ্টি। তবে তার আগে এ বছর গ্রীষ্মের তাপপ্রবাহ নজিরবিহীন মাত্রায় বাড়িয়ে দিয়ে গেল শীতাতপ যন্ত্রের (এসি) ব্যবসা। এমনকি সংস্থাগুলি তার দাম বাড়ানো সত্ত্বেও।
পরিসংখ্যান বলছে, চড়া গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এসির চাহিদা এ বার রেকর্ড সংখ্যায় বেড়েছে। সাধারণত এক বছরে যতগুলি যন্ত্র বিক্রি হয়, তা বিকিয়েছে গত তিন মাসে। বৃদ্ধির হার গড়ে ৫০%। কারও দাবি, তা ৮০%। চাহিদা পূরণের তাগিদে উড়ান মারফত বিদেশ থেকে যন্ত্রাংশ আমদানি করে এসি তৈরির কাজ চালাতে হয়েছে সংস্থাগুলিকে। সেই সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে বর্তমান পরিকাঠামোয় এসি লাগানোর পরিষেবাও ঠিকমতো দিতে পারেনি তারা। ফলে তাতে কিছু ক্রেতার জন্য সময় লেগে গিয়েছে এক সপ্তাহ বা তারও বেশি। শিল্পমহল বলছে, এই সব কারণে এসির দামও বাড়াতে হয়েছে তাদের। তবে তাতে চাহিদা কমেনি।
উল্লেখ্য, ভারতের এসি সংস্থাগুলি এখনও আমদানির উপরে অনেকটাই নির্ভরশীল। মূলত ক্রস ফ্লো ফ্যান বা মোটর, কম্প্রেসর, পিসিবি সার্কিটের মতো যন্ত্রাংশ আসে বিদেশ থেকে। সে জন্য চিন, তাইওয়ান, তাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া এবং জাপান থেকে জাহাজে করে পণ্য আনা হয়। কিন্তু দ্রুত বাড়তে থাকা চাহিদায় বিপাকে পড়ে তারা। চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে বিমানে ওই সব পণ্য আনতে বাধ্য হয়েছে সংস্থাগুলি। ডায়কিন এয়ারকন্ডিশনিং ইন্ডিয়ার সিএমডি কানওয়ালজিৎ জাওয়া বলেন, কিছু যন্ত্রাংশের জোগানে ঘাটতি ছিল। সেগুলি বিমানে করে আনা হয়েছে।
এপ্রিল-মে-জুনে দেশে এসি বিক্রি প্রায় ৫০% বেড়েছে। কেন্দ্রের উৎপাদন ভিত্তিক উৎসাহ প্রকল্পে এর যন্ত্রাংশ তৈরি হলেও তা চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়, বলছে অনেক সংস্থা। যেমন, ব্লুস্টারের এমডি বি ত্যাগরাজনের মতে, ‘‘শিল্পমহল ২৫%-৩০% বৃদ্ধির জন্য প্রস্তুত ছিল। কিন্তু কেউই চাহিদা ৭০%-৮০% বাড়বে বলে ভাবেনি। ...ফলে ঘাটতি স্বাভাবিক। তা মেটাতে হয় যন্ত্রাংশ বিমানে করে আনতে হবে। নয়তো পণ্য পৌঁছে দেওয়া যাবে না।’’ তিনি জানান, মার্চে বিক্রি বেড়েছে ৪০%, এপ্রিলে ৮০%। মে-তে ৭০%। জুনেও তা ৭০% হবে বলে ধারণা।
শিল্পকে চিন্তায় রেখেছে তামা, অ্যালুমিনিয়ামের মতো কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি। যার জেরে তাদের একাংশ এসি-র দাম ৪%-৫% বাড়িয়েছে। গোদরেজ অ্যাপ্লায়েন্সের অন্যতম কর্তা কমল নন্দী বলেন, ওই দুই ধাতুর দাম প্রায় ২০% বেড়েছে। এতে বছরের পরবর্তী সময়ে এসি-র দাম বাড়তে পারে বলে মত ত্যাগরাজনের।