অসহায়: হত্যে দিয়েও বদলাতে পারেননি বাতিল নোট। ফাইল চিত্র
ভোট-বছরের প্রথম দিনেই নোট বাতিল নিয়ে ফের নতুন তত্ত্ব নরেন্দ্র মোদীর! দাবি, ওই সিদ্ধান্ত আদৌ আচমকা ছিল না। বরং এক বছর আগেই বলা হয়েছিল কালো টাকা জরিমানা সমেত সরকারের ঘরে জমা দেওয়ার কথা। অর্থাৎ ইঙ্গিত, সময় থাকতে সে কথায় আমল না দিলে খেসারত তো দিতেই হবে।
কিন্তু সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মোদী এ কথা বলতেই তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নতুন করে। মূল প্রশ্ন, কালো টাকা যাঁরা জমা দেননি, তাঁরা মাসুল গুনলেন কোথায়? ব্যাঙ্ক, এটিএমের লাইনে প্রাণ গেল তো সাধারণ মানুষের! বহু ছোট ব্যবসা ও কারখানার ঝাঁপ বন্ধ হওয়ার কারণে যাঁদের কাজ গেল, তাঁরাও তো সাধারণ মানুষ! ফলে সব মিলিয়ে, ক্ষতি তো সেই আমজনতার।
আগেও এ প্রশ্ন বহু বার তুলেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন থেকে শুরু করে শীর্ষ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। অমর্ত্যবাবুর মতে, ‘‘নোট নাকচ ভুল সিদ্ধান্ত কি না, তা নিয়ে আলোচনার জায়গা নেই। কত বড় ভুল, শুধু তা নিয়ে কথা হতে পারে।’’ কালো টাকাকে পিষে মারতে বাজার থেকে ৮৬% নোট এক লপ্তে তুলে নেওয়া যে বিরাট ভুল, তা-ও বলেছেন তিনি।
রাজনের কথায়, ‘‘নোট বাতিল ও জিএসটির জোড়া ধাক্কা অর্থনীতির উপরে গভীর প্রভাব ফেলেছিল।’’ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও সংসদে বলেছিলেন, ‘‘নোটবন্দিতে কৃষি, ছোট শিল্প ধাক্কা খাবে। কষ্টে পড়বেন অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীরা। এ জন্য জিডিপি কমবে অন্তত ২ শতাংশ বিন্দু।’’ নোটবন্দিকে নির্মম ধাক্কা বলেছেন প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যনও। আমজনতার ভোগান্তির কথাই বলেছেন এঁরা সকলে। এ দিন মোদীর দাবির পরে সেই প্রশ্নই ফের মাথাচাড়া দিল নতুন করে।