ছবি এএফপি।
কিশোর বিয়ানির সংস্থা ফিউচার রিটেলকে নিয়ন্ত্রণে অ্যামাজনের প্রচেষ্টা বিদেশি মুদ্রা আইনভঙ্গের শামিল। বুধবার এই রায় দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। শুধু তা-ই নয়, তাতে বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত আইনও ভাঙা হবে বলে অভিমত আদালতের। বিয়ানির অনথিভুক্ত সংস্থা ফিউচার কুপন্সের ৪৯ শতাংশ অংশীদারি কেনার সময় যে চুক্তি হয়েছিল ওই দুই সংস্থার, তা ভাঙার অভিযোগ এনেছে আমেরিকার ই-কমার্স বহুজাতিক সংস্থা অ্যামাজন। যদিও আদালত তাতে সায় দেয়নি।
দিল্লি হাইকোর্টে ফিউচার রিটেল লিমিটেড (এফআরএল) জানিয়েছে, মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স রিটেল ভেঞ্চার্স (আরআরভিএল)-কে ২৪,৭১৩ কোটি টাকায় নিজেদের খুচরো, পাইকারি, গুদাম ও পণ্য পরিবহণ ব্যবসা বিক্রি করা নিয়ে যে চুক্তি হয়েছিল, আদালতের মতে, তা আইনত বৈধ। এ নিয়ে স্টক এক্সচেঞ্জেরও দ্বারস্থ হয়েছিল বিয়ানির সংস্থা। সোমবার, ২১ ডিসেম্বর ফিউচার এবং আরআরভিএল-এর চুক্তিতে অ্যামাজনের প্রতিনিধি রাখার অধিকার বহাল রেখেছিল আদালত। তবে বুধবার আদালত জানিয়েছে, ২৪,৭১৩ কোটি টাকার ওই চুক্তিতে বাধা সৃষ্টি করতেই তা করেছিল অ্যামাজন।
ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে সিঙ্গাপুরের সালিশি আদালতে মামলা চলছে। সালিশি আদালত জানিয়েছিল, চূড়ান্ত রায় ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তাদের ব্যবসা আরআরভিএল-কে বিক্রি করতে পারবে না ফিউচার রিটেল। তবে বুধবার এই বিষয়ে এমন কিছু পর্যবেক্ষণ রয়েছে আদালতের যাতে ২০১৯-এ ফিউচার কুপন্সে করা বিনিয়োগে বড় ধাক্কা দিতে পারে অ্যামাজনকে।
আরও পড়ুন: আরও কড়া অবস্থান নিল কৃষক সংগঠনগুলো, রাখল ‘এমএসপি’ শর্ত
প্রসঙ্গত, অ্যামাজনের দাবি ছিল, গত বছরের শেষে ফিউচার রিটেলের অনথিভুক্ত সংস্থা ফিউচার কুপন্সের ৪৯ শতাংশের শেয়ার কিনেছিল তারা। ফিউচার রিটেলের ৭.৩ শতাংশের অংশীদারিত্ব রয়েছে ফিউচার কুপন্সের কাছে। দু’পক্ষের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল, তিন থেকে ১০ বছরের মধ্যে ফিউচার গোষ্ঠীর অংশীদারি বিক্রি হলে তারাই তা প্রথম কেনার সুযোগ পাবে। ফিউচার গোষ্ঠীর অবশ্য দাবি ছিল, অ্যামাজন ফিউচার কুপন্স কেনার পর এক বছরও পার হয়নি। ফলে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ খাটে না। তবে এ নিয়ে সিঙ্গাপুরের সালিশি আদালতের দ্বারস্থ হয়ে আরআরভিএল-এর সঙ্গে ফিউচার গোষ্ঠীর চুক্তি সাময়িক ভাবে স্থগিত করতে পেরেছিল অ্যামাজন। তবে দিল্লি হাইকোর্টের মতে, “ফিউচার রিটেল এবং অ্যামাজনের মধ্যে এমন কোনও মধ্যস্থতাকারী চুক্তি নেই, যা ফিউচার কুপন্স এবং অ্যামাজনের মধ্যে রয়েছে।” আদালতের মতে, এই পরিপ্রেক্ষিতে বলা যেতে পারে যে অ্যামাজনের জরুরি সালিশি প্রক্রিয়া এবং পরে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়াটা পুরোপুরি এক্তিয়ারহীন হয়ে করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিধায়কহীন নন্দীগ্রামের তেখালি মাঠে ৭ জানুয়ারি সভা করবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা
আদালতের রায়ে আরও বলা হয়েছে, “রিলায়্যান্সের সঙ্গে ফিউচারের চুক্তিতে অ্যামাজনের সম্মতি প্রয়োজন বলে যে যুক্তি দিয়েছে অ্যামাজন, তা সঠিক নয়। অ্যামাজনের এই যুক্তি বেআইনি পথে ঠেলে দেবে এবং চুক্তিও আইনবিরুদ্ধ হবে।”