পুরোদস্তুর বাণিজ্য চুক্তি হয়নি ঠিকই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম ভারত সফরে যে ক’টি চুক্তি হয়েছে, তার মধ্যে প্রতিরক্ষা ছাড়াও রয়েছে গ্যাস ক্ষেত্রে দু’দেশের সংস্থার গাঁটছড়া। মঙ্গলবার একসঙ্গে কাজ করতে চুক্তি করেছে ভারতের তরফে ইন্ডিয়ান অয়েল, মার্কিন সংস্থা এক্সনমোবিলের ভারতীয় শাখা এক্সনমোবিল ইন্ডিয়া এলএনজি এবং আমেরিকার তরফে চার্ট ইন্ডাস্ট্রিজ়ের। যার লক্ষ্য, পাইপলাইন সংযোগের বাইরে থাকা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) পৌঁছনোর পরিকাঠামো তৈরি করা।
২০১৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতে বিভিন্ন মার্কিন পণ্যে চড়া শুল্ক নিয়ে তোপ দেগেছেন ট্রাম্প। তবে তার মধ্যেই গত কয়েক বছরে আমেরিকা থেকে ভারতের তেল আমদানি বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। মঙ্গলবার যার প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প নিজেও। আর মার্কিন বিদ্যুৎ সচিব ড্যান ব্রুইয়েত জানান, দু’বছর আগেও দিনে ২৫,০০০ ব্যারেল তেল আমদানি করত ভারত। এখন ২.৫ লক্ষ। তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান জানান, ভারতের ষষ্ঠ বৃহত্তম তেল সরবরাহকারী দেশ হল আমেরিকা। এই অবস্থায় দু’দেশের সংস্থার মধ্যে গ্যাস সরবরাহের চুক্তি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত অনেকের। বিশেষত, এই ভারতের সম্ভাবনাময় তেল-গ্যাসের বাজারকেই যেখানে পাখির চোখ করে এগোচ্ছে নানা দেশের তাবড় সংস্থাগুলি।
এ দিনের চুক্তি অনুসারে, গ্যাস গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত নয় এমন জায়গায় ও পাইপলাইন ছাড়া কী ভাবে সড়ক, রেল ও জলপথে কন্টেনারে করে এলএনজি পাঠানো যায়, তার পথ খুঁজবে তিন সংস্থা। এক্সনমোবিল এলএনজি মার্কেট ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান অ্যালেক্স ভল্কভের মতে, দরকার মতো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দ্রুত গ্যাস পৌঁছনোই লক্ষ্য। একই কথা জানান চার্টের সিইও জিলিয়ান ইভাঙ্কও। চার্টের কাজই হল এলএনজি পরিবহণ-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহারের যন্ত্র তৈরি করা।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে দেশে তেল ও গ্যাসের চাহিদা মেটাতে পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির উপরেই মূলত নির্ভর করে ভারত। যার মধ্যে রফতানিকারীদের তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে ইরাক। সৌদি আরব এত দিন সব চেয়ে উপরে থাকলেও, এখন তারা দ্বিতীয় স্থানে। নয়াদিল্লির লক্ষ্য হল, ওই দেশগুলির উপরে নির্ভরতা ক্রমশ কমিয়ে আনা।