শেষ দিনেই স্বস্তির বার্তা।
বৃহস্পতিবার ছিল কেন্দ্রের প্রাপ্য, বকেয়া লাইসেন্স ফি এবং স্পেকট্রাম ব্যবহারের চার্জ মেটানোর শেষ দিন। এ দিনই কেন্দ্রীয় টেলিকম দফতর (ডট) জানাল, বকেয়া না-মেটালে আপাতত তারা কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে না টেলিকম সংস্থার বিরুদ্ধে। ভোডাফোন আইডিয়া, এয়ারটেল ও টাটা টেলিসার্ভিসেস অবশ্য আগেই জানিয়েছে, বকেয়া মেটাতে বাড়তি সময় চাওয়া নিয়ে তাদের আর্জি সুপ্রিম কোর্ট শোনার আশ্বাস দেওয়ায়, পরের নির্দেশ না-শুনে তারা টাকা মেটাবে না। তবে সে ক্ষেত্রে ডট তা মানবে কি না কিংবা এর জেরে কোনও শাস্তির মুখে পড়তে হবে কি না, তা নিয়ে চাপা অশান্তি ছিলই। ডটের বার্তায় সেই মেঘ কাটল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
টেলিকম সংস্থাগুলির সংগঠন সিএওআইয়ের ডিজি রাজন ম্যাথুজ়ের দাবি, ডটের সিদ্ধান্তে শিল্পের দুঃসময়ে সরকারের পাশে দাঁড়ানোর সদিচ্ছা দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘টেলিকম শিল্পের চরম আর্থিক সঙ্কটে ডট সাহায্য করায় আমরা কৃতজ্ঞ।’’ রিলায়্যান্স জিয়ো অবশ্য এ দিনই বকেয়া ১৯৫ কোটি টাকা মিটিয়ে দিয়েছে।
রায় অনুযায়ী টেলি সংস্থাগুলির কাছে ডট পাবে ১.৪৭ লক্ষ কোটি টাকা। এয়ারটেল ও ভোডাফোনের বকেয়া প্রায় ৮৮,৬২৪ কোটি। এই খাতে এয়ারটেল অর্থের সংস্থান করলেও ভোডাফোন জানায়, ত্রাণ না-পেলে তারা টাকা মেটাতে পারবে না। সংস্থা গোটানোর হুঁশিয়ারিও দেন চেয়ারম্যান কুমার মঙ্গলম বিড়লা। বাজারে জল্পনা ছড়ায় তা হলে কি বন্ধ হবে ভোডাফোন? দুই সংস্থাই বকেয়া মেটাতে বাড়তি সময় চেয়েছে।
বকেয়া বৃত্তান্ত
• টেলিকম সংস্থাগুলির আয়ের কোন কোন হিসেব ধরে তার ভিত্তিতে লাইসেন্স ফি ও স্পেকট্রাম ব্যবহারের চার্জ দিতে হবে, তা ঠিক করা নিয়ে তাদের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল টেলিকম দফতরের (ডট)।
• গত অক্টোবরে ডটের হিসেবকেই মান্যতা দেয় সুপ্রিম কোর্ট। নির্দেশ দেয়, তিন মাসের মধ্যে স্পেকট্রাম ও লাইসেন্স ফি বাবদ কেন্দ্রকে সব বকেয়া মেটাক সংস্থাগুলি। যার অঙ্ক ১.৪৭ লক্ষ কোটি টাকা।
• ২৩ জানুয়ারি ছিল বকেয়া মেটানোর শেষ দিন।
• নির্দেশের একাংশ পুনর্বিবেচনার জন্য টেলি সংস্থাগুলির আর্জি নাকচ করে সর্বোচ্চ আদালত।
• বকেয়া মেটানোর বাড়তি সময় চেয়ে ফের আদালতে আর্জি জানায় সংস্থাগুলি।
• আগামী সপ্তাহে সেই আবেদনের শুনানি।
শিল্প বলছে
• শুনানি শেষ না-হওয়া পর্যন্ত বকেয়া মেটানোর প্রক্রিয়া স্থগিত থাক।
ডট জানাল
• আদালতের নতুন নির্দেশ আসার আগে পর্যন্ত বকেয়া না-মেটালে সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।
সূত্রের খবর, এ দিন ডিরেক্টর অব লাইসেন্সিং ফিনান্স পলিসি সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে নির্দেশ দেয়, কোনও সংস্থা বকেয়া না-মেটালে, পরবর্তী নির্দেশ না-আসা পর্যন্ত যেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া না হয়। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এর ফলে আপাতত সঙ্কট কাটল ভোডাফোনের।
টেলি সংস্থাগুলির সঙ্গেই অয়েল ইন্ডিয়া, গেল, পাওয়ার গ্রিডের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকেও ৩ লক্ষ কোটি টাকা বকেয়ার নোটিস ধরিয়েছে ডট। যার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে অয়েল ইন্ডিয়া। তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের দাবি, ওই সংস্থাগুলির মূল ব্যবসা টেলি পরিষেবা নয়। ফলে তাদের বকেয়াও নেই। এটা হয়েছে সমন্বয়ের অভাবে।