—প্রতীকী চিত্র।
গত অর্থবর্ষে দেশে চাহিদা বেড়েছিল ঋণের। তাল মিলিয়ে পুঁজি দিচ্ছিল ব্যাঙ্কগুলি। কিন্তু এ বার ঋণদান বৃদ্ধির হার কিছুটা কমতে পারে বলে আশঙ্কা মূল্যায়ন সংস্থা ক্রিসিলের। তাদের পূর্বাভাস, জিডিপি বৃদ্ধির গতি ঢিমে হওয়া, ব্যাঙ্কগুলিতে আমানত কমে যাওয়া-সহ নানা কারণে তা হতে পারে। গত বার ঋণ বেড়েছিল ১৬%। চলতি অর্থবর্ষে নামতে পারে ১৪ শতাংশে।
গত অর্থবর্ষের প্রথম তিন ত্রৈমাসিকেই আর্থিক বৃদ্ধি ৮% পেরিয়েছে। গোটা অর্থবর্ষের পূর্বাভাস ৭.৬%। তবে এই বছর তা ৬.৮% হবে বলে অনুমান। ক্রিসিলের দাবি, শ্লথ ঋণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ এটি। কারণ, সে ক্ষেত্রে আর্থিক কর্মকাণ্ড মন্থর হবে এবং কমবে পুঁজির চাহিদা। তার উপর ব্যাঙ্কগুলিতে আমানতও বাড়ছে মন্থর হারে। ঋণ বাড়াতে ব্যাঙ্কে নগদ জোগানের অন্যতম সূত্র যেটি। ক্রিসিল বলছে, আমানত এবং ঋণ বৃদ্ধির ফারাক কমছে কয়েক বছর ধরেই।
এর আগে গত অর্থবর্ষেই এই সঙ্কট সম্পর্কে সতর্ক করেছিল মূল্যায়ন সংস্থা ইক্রা। প্রশ্ন উঠেছিল, ঋণের চাহিদা লাফিয়ে বাড়লেও তা মেটানোর পুঁজি ব্যাঙ্কগুলি পাবে কোথা থেকে? সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, নতুন অর্থবর্ষে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হওয়ার ইঙ্গিত মিলল। ইক্রা বলেছিল, গত অর্থবর্ষের প্রথমার্ধে বাজার থেকে তুলে নেওয়া ২০০০ টাকার নোট জমা পড়ার কারণে ব্যাঙ্কে নগদের জোগান বাড়ে। কিন্তু আগামী দিনে তার অভাব পিছু টেনে ধরতে পারে ঋণকে। যা মেটাতে আমানত বৃদ্ধির দিকে মন দিতেই হবে ব্যাঙ্কিং শিল্পকে। নজর ঘোরাতে হতে পারে মূলধনী বাজার এবং স্বল্প মেয়াদে ঋণ নেওয়ার দিকেও।
ক্রিসিলের রিপোর্ট অবশ্য বলছে, এ বছর ঋণদান বৃদ্ধির গতি শ্লথ হওয়ার আরও কারণ আছে। তার একটি, ঝুঁকি কমাতে বন্ধকহীন ঋণে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের চালু করা বাড়তি আর্থিক সংস্থানের বিধি। আর অন্যটি, গত অর্থবর্ষে উঁচু ভিতের উপরে পা রেখে করতে হওয়া ধার দেওয়ার হিসাব।
যদিও ইতিবাচক দিক হিসেবে ঋণের চাহিদার মৌলিক বিষয়গুলি এক থাকবে বলেই মনে করছে ক্রিসিল। তবে তারা এটাও বলেছে, বেসরকারি সংস্থাগুলি মূলধনী খরচে জোর দেবে। যা বিশেষত চলতি অর্থবর্ষের শেষের দিকে ধার নেওয়ার গতি বাড়াতে পারে। বৈদ্যুতিন, সেমিকনডাক্টর, বৈদ্যুতিক গাড়ির মতো সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র মূলধনের চাহিদা তৈরি করবে। তবে ছোট শিল্পের ঋণ বৃদ্ধির হার কমতে পারে। কৃষিতে সেই আশঙ্কা থাকলেও তা কিছুটা নির্ভর করবে বর্ষার উপরও।