কানাইপুরে মারধর, ভাঙচুর চালিয়ে ভেড়ি লুঠের ঘটনায় সোমবার পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য-সহ চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন এক মৎস্যজীবী। মঙ্গলবার অভিযুক্ত তৃণমূল সদস্য শচীন মজুমদারের পক্ষে থানায় গণস্বাক্ষর সংবলিত পাল্টা অভিযোগ জমা দিয়েছেন কয়েকজন মৎস্যচাষি। পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আচ্ছালাল যাদবের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। সব মিলিয়ে ভেড়ি দখল নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও বেআব্রু হয়ে পড়ল।
পুলিশ অবশ্য দু’পক্ষের কারও অভিযোগকেই গুরুত্ব দেয়নি। কোনও মামলাও রুজু করা হয়নি। এ ব্যাপারে পুলিশের বক্তব্য, অনুসন্ধান করে জানা গিয়েছে বিতর্কিত ভেড়ি বিবদমান কোনও পক্ষেরই নয়। এই সংক্রান্ত কোনও নথি অথবা লিজ চুক্তির প্রমাণও ওঁরা দেখাতে পারেননি। তাই অভিযোগ এফআইআর হিসেবে গণ্য করা হয়নি। যদিও সেদিনের ঘটনায় বোমা-বন্দুক নিয়ে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব থামাতে না পারায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার মানুষ।
বিতর্কিত ভেড়িটি হিন্দমোটর কারখানার পিছনের অংশে অবস্থিত। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই ভেড়ি হিন্দমোটর কারখানার অংশ ছিল। কয়েক বছর আগে হিন্দমোটর কর্তৃপক্ষ এক বেসরকারি সংস্থাকে জমি বিক্রি করে। ভেড়ি এখন সেই সংস্থারই। সংস্থার তরফে পুলিশে একটি অভিযোগ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, এক দল দুষ্কৃতী ওই দিন রাতে চড়াও হয়ে নিরাপত্তারক্ষীদের মারধর করে তাঁদের আটকে রাখে। তাঁদের বসার জায়গা ভাঙচুর করা হয়। তবে মাছ লুঠের কথা অভিযোগপত্রে নেই। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
তবে ভেড়ির দখল নিয়ে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল বা আচ্ছালাল কেউই স্বীকার করেননি। আচ্ছালাল এ দিন বলেন, ‘‘কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা পুলিশের তদন্তেই তা উঠে আসবে।’’ প্রবীরবাবুর দাবি, ভেড়িতে মাছ চাষ নিয়ে দু’পক্ষের গোলমাল মেটানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। রবিবারের ঘটনায় পুলিশকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতেও বলেছেন। ঘটনায় অকারণে তাঁর নাম জড়ানো হচ্ছে।
তবে, দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরেই যে ওই এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে, জেলা পুলিশের আধিকারিক এবং শাসক দলের একাংশ তা মেনে নিয়েছেন।