প্রতীকী ছবি।
লকডাউনের জেরে সারা দেশ কার্যত স্তব্ধ। যার প্রভাব পড়েছে বিভিন্ন সরকারি সমীক্ষার কাজে।
কী ভাবে? যেমন, খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হারের ভিত্তিতে অর্থ মন্ত্রক, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আর্থিক নীতি নির্ধারণ করে। কিন্তু সূত্রের খবর, খুচরো বাজারদর জানতে লকডাউনের মধ্যে পরিসংখ্যান দফতরের সমীক্ষকেরা বাজারে যাবেন না। দোকান-বাজারে ফোন করে বা সংসারের কেনাকাটার সময়েই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম জেনে নেবেন তাঁরা। প্রশ্ন উঠেছে, এ ভাবে খুচরো বাজারদর ঠিক মতো বোঝা যাবে তো?
শুধু বাজারদর নয়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও লকডাউনের জেরে সপ্তম আর্থিক শুমারি, স্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যে অগ্রগতি, পর্যটন ক্ষেত্রের সমীক্ষাতেও বাধা পড়েছে। অর্থ মন্ত্রক ও পরিসংখ্যান মন্ত্রকের কর্তাদের দুশ্চিন্তা, আর্থিক পরিসংখ্যানেই গণ্ডগোল থাকলে অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর নীতি তৈরি হবে কী ভাবে?
করোনার ধাক্কায় প্রথমেই জনগণনার কাজ পিছিয়ে গিয়েছিল। এর পরে সপ্তম আর্থিক শুমারির কাজও ছ’মাস পিছিয়ে দিচ্ছে পরিসংখ্যান মন্ত্রক। গোটা দেশে কত কারখানা, দোকান বা ব্যবসা রয়েছে, সেখানে কত জন কাজ করছেন, তা জানতে গত বছর থেকে আর্থিক শুমারির কাজ শুরু হয়েছিল। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যের ছবির সঙ্গে কর্মসংস্থানের সংখ্যাও স্পষ্ট হত। মার্চে সমীক্ষার কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, লকডাউনের বাধায় সময়সীমা ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের স্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্য ছুঁতে কোন রাজ্যে কী কাজ হচ্ছে, নীতি আয়োগের নেতৃত্বে সেই সমীক্ষাও বন্ধ। একই সঙ্গে বন্ধ রাখতে হয়েছে পর্যটন সংক্রান্ত সমীক্ষাও।
প্রাক্তন মুখ্য পরিসংখ্যানবিদ প্রণব সেনের নেতৃত্বে আর্থিক পরিসংখ্যান সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি তৈরি হয়েছে। সেই কমিটির সদস্যেরাও উদ্বিগ্ন। তাঁদের মতে, নতুন অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে কার্যত কোনও আর্থিক পরিসংখ্যানই ঠিক মতো মিলবে না। লকডাউনে শুধুমাত্র জরুরি ক্ষেত্রকে ছাড় দেওয়ায় অর্থনীতির শতকরা ৬০ ভাগই বন্ধ। কিন্তু বাকি ৪০ ভাগ যে স্বাভাবিক ভাবে চলছে, তা জানার জন্যও পরিসংখ্যান দরকার। কিন্তু খুচরো বাজারদরের মতো জরুরি তথ্য না এলে, সেখানেও সমস্যা দেখা দেবে। পরিসংখ্যান মন্ত্রকের কর্তাদের যুক্তি, এ ছাড়া কোনও উপায়ও নেই।