প্রতীকী চিত্র
এখন সম্ভবত একদিনও এমন যায় না, যে দিন কাঁপুনি ধরায় না ক্ষয়ক্ষতির নতুন হিসেব। করোনার ধাক্কায় বিপর্যস্ত উৎপাদন, চাহিদা, সরবরাহ এবং সর্বোপরি কর্মসংস্থান তুলে ধরে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপুঞ্জ বলেছিল এ বছর ৩.২% সঙ্কুচিত হবে বিশ্ব অর্থনীতি। শুক্রবার প্রকাশিত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের (এডিবি) নতুন সমীক্ষায় দেখা গেল, তা ডুবতে পারে ৫.৮ থেকে ৮.৮ লক্ষ কোটি ডলারের লোকসানে। যা গোটা পৃথিবীর জিডিপি-র ৬.৪% থেকে ৯.৭ শতাংশের সমান।
এডিবি-র এই পূর্বাভাস বিশ্বব্যাঙ্ক ও আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডারের (আইএমএফ) থেকেও ভয়ঙ্কর। এর আগে বিশ্বব্যাঙ্কের ইঙ্গিত ছিল, সারা বিশ্বের জিডিপি সঙ্কুচিত হতে পারে ২.৪%। আর আইএমএফ বলেছিল ৬.৩%। রাষ্ট্রপুঞ্জের আশঙ্কা, বিশ্ব অর্থনীতির যে ক্ষয়ক্ষতি হতে চলেছে, তা ১৯৩০ সালের মহামন্দার পরে আর দেখা যায়নি। এর জেরে আগামী দু’বছর বিশ্ব অর্থনীতির বহর কমতে পারে ৮.৫ লক্ষ কোটি ডলার। অর্থাৎ, গত চার বছরে অর্থনীতি যতটা বেড়েছে, তা উধাও হতে পারে।
এ দিন এডিবি-র রিপোর্ট বলছে, অতিমারি আটকাতে ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তানের মতো দেশে গতিবিধিতে যে কড়া নিয়ন্ত্রণ চেপেছে, তাতে শুধু দক্ষিণ এশিয়ার মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনই কমবে প্রায় ৩.৯%-৬%। তিন মাস নিয়ন্ত্রণ বহাল থাকলে এশিয়া ও প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলে আর্থিক ক্ষতি ছুঁতে পারে ১.৭ লক্ষ কোটি ডলার, ছ’মাস থাকলে ২.৫ লক্ষ কোটি। তাদের দাবি, বিশ্বে উৎপাদন যতটা কমতে চলেছে, তার প্রায় ৩০% কমবে এই অঞ্চলেই।
তবে রিপোর্টে আশার কথাও শুনিয়েছে এডিবি। বলেছে, এই পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি দেশের সরকারের ভূমিকা। ধারাবাহিক ভাবে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে খরচ বাড়িয়ে, আয় হারানো মানুষ ও ব্যবসা হারানো সংস্থার হাতে সরাসরি আর্থিক সাহায্য পৌঁছে এবং আর্থিক নীতি শিথিল করে একমাত্র তারাই ক্ষতির বহর কমাতে পারে ৩০%-৪০%। এ জন্য বিভিন্ন দেশকে দ্রুত হাত মিলিয়ে নীতি তৈরির কাজে নামার পরামর্শ দিয়েছে তারা। সতর্ক করে দিয়েছে এই বলে যে, যত বেশি দিন ব্যবসা, কাজকর্মে নিয়ন্ত্রণ বহাল থাকবে, তত বাড়বে দুর্দশা। আর তত লম্বা হবে ঘুরে দাঁড়ানোর সময়।