—ফাইল চিত্র।
এক দিকে আদানি গোষ্ঠীর বন্দর ব্যবসায় আধিপত্য। অন্য দিকে ব্যাঙ্কের হিসাবের খাতা থেকে অনাদায়ি ঋণ মোছা ও স্বেচ্ছায় খেলাপিদের হাত ধরে ২০১৯ সাল থেকে দিনে ১০০ কোটি টাকারও বেশি অনুৎপাদক সম্পদ তৈরির অভিযোগ তুলে ধরে শনিবার কেন্দ্রকে জোড়া আক্রমণ করল কংগ্রেস।
বিরোধী দলের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশের প্রশ্ন, দরপত্রে অংশ না নিয়ে ও প্রতিযোগীদের উপরে সরকারের হানার সুবিধা নিয়ে কী ভাবে দেশের সব চেয়ে বড় বন্দর পরিচালনাকারী সংস্থা হল আদানি গোষ্ঠী? এক দশকে বেসরকারি বন্দর ব্যবসায় তাদের দখল ১০% থেকে ২৫% হয়েছে। সরকারি বন্দরের বাইরে ৫৭% পণ্য পরিবহণই হয় তাদের বন্দরগুলি দিয়ে। এতে একটি সংস্থার আধিপত্য তৈরি হওয়া নিয়ে কেন্দ্রের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ আধিকারিকই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। রমেশের তোপ, যে সংস্থার বিরুদ্ধে শেয়ার দরে কারচুপি-সহ নানা অভিযোগ রয়েছে, তাদের হাতে উল্লেখযোগ্য পরিকাঠামোর অংশীদারি থাকা দেশের নিরাপত্তার পক্ষেও আশঙ্কার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর তদন্তকারী সংস্থাগুলি যখন এ নিয়ে তদন্ত করবে না, তখন যৌথ সংসদীয় কমিটিই ভরসা।
পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের অন্য এক খবর তুলে ধরে দেশের অর্থনীতির হাল নিয়েও মোদীকে আক্রমণ করেছে বিরোধী দলটি। আগামী আড়াই দশককে দেশের ‘অমৃতকাল’ বলে বর্ণনা করছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট মল্লিকার্জুন খড়্গের তোপ, মোদীর জমানায় দেশের অর্থনীতি ‘ডিফল্টার কালে’ পরিণত হচ্ছে। যেখানে শিল্পপতি বন্ধুদের ‘বিনামূল্যে মিষ্টি’ বিতরণ করছে কেন্দ্র। আর কমছে সাধারণের সঞ্চয়। কৃষকেরা ঋণ মকুবের দাবি জানালে সুরাহা মিলছে না। অথচ বন্ধুরা চাইলেই তা মকুব করছে মোদী সরকার। তাঁর প্রশ্ন, গত ন’টি অর্থবর্ষে কেন্দ্র কি ১৪.৫৬ লক্ষ কোটি টাকার অনুৎপাদক সম্পদ মোছেনি? ২০২৪ সালের ভোটেই মানুষ জবাব দেবেন।
যদিও কংগ্রেসের অভিযোগ খণ্ডন করে বিজেপির দাবি, দেশের ব্যাঙ্কিং মহলের অনুৎপাদক সঙ্কটের সৃষ্টি-কর্তা কংগ্রেস এ কথা বলার ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে, যা বিস্ময়কর। দলের তথ্যপ্রযুক্তি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় এক্সে দাবি করেছেন, কেন্দ্রের প্রচেষ্টায় প্রতিটি রাষ্টায়ত্ত ব্যাঙ্ক এখন লাভে চলছে। তাদেরকে পুঁজি জোগানো হয়েছে। গত ন’বছরে কমেছে অনাদায়ি ঋণ। বেড়েছে মুনাফাও। এ প্রসঙ্গে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনকে কংগ্রেসের ‘সহযোগী’ বলে কটাক্ষ করে মালবীয়ের দাবি, রাজনই দ্ব্যর্থহীন ভাবে জানিয়েছিলেন, বহু সমস্যাজনক ঋণের উৎস ছিল ২০০৪-২০১৪ সাল। তাই এ সব কথায় কান না দিয়ে দেশের মানুষ লোকসভা ভোটে সত্যিই জবাব দেবেন।