গৌতম আদানি। ফাইল ছবি।
আদানিদের বিরুদ্ধে শেয়ার দর ও আর্থিক লেনদেনে প্রতারণার অভিযোগ ঝড় তুলছে বাজারে। গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির শেয়ারের দাম মুখ থুবড়ে পড়েছে। যা শুক্রবার সেনসেক্সের ৮৭৪ পয়েন্ট পতনেরও অন্যতম কারণ। তার পরেই উঠেছে প্রশ্ন, আমেরিকার লগ্নি সংক্রান্ত গবেষণাকারী সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টে প্রকাশিত অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হলে দেশের অর্থনীতি নতুন করে ঝুঁকির মুখে পড়বে না তো? মোদী সরকারের পছন্দের শিল্প গোষ্ঠী বলে কটাক্ষ ছুড়ে এ দিন বিরোধী কংগ্রেসের দাবি, সাধারণ মানুষের স্বার্থে অবিলম্বে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্তে নামুক শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি ও রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক।
আশঙ্কা প্রকাশ করে কংগ্রেসের দাবি, আদানিদের সংস্থায় এলআইসি-র বিপুল লগ্নি আছে। স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে রয়েছে গোষ্ঠীর ঋণ। ফলে আদানিদের শেয়ার মূল্য কমলে তাদের ক্ষতি। যেখানে মানুষের পুঁজি থাকে। ইতিমধ্যেই এলআইসি-র লগ্নি মূল্য কমেছে। এ দিন তাদের শেয়ার দর ৩.৪৫% পড়েছে। বেশ খানিকটা নেমেছে স্টেট ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অব বরোদা-সহ ব্যাঙ্কিং শিল্পের শেয়ারও।
কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ বলেন, দেশের আর্থিক ব্যবস্থাকে স্থিতিশীল রাখা আরবিআই ও সেবির কর্তব্য। তাই অভিযোগ খতিয়ে দেখা দরকার তাদের। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আদানিদের সম্পর্ক প্রতারণায় ইন্ধন জুগিয়েছে কি না বা দেওয়া-নেওয়ার স্বার্থের খাতিরে আর্থিক নয়ছয় প্রশ্রয় পেয়েছে কি না, দেখতে হবে সেটাও।
হিন্ডেনবার্গের অভিযোগ, কৃত্রিম ভাবে শেয়ারের দর বহু গুণ বাড়িয়েই আদানিরা বিশাল শেয়ার সম্পদ গড়েছে। গত তিন বছরে কর্ণধার গৌতম আদানির শেয়ার সম্পদ বেড়েছে৮০০ শতাংশের বেশি। এমন গুরুতর অভিযোগের তদন্ত হওয়া দরকার, মত আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্তের। অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারের বক্তব্য, ‘‘গোষ্ঠীর সংস্থায় এলআইসির লগ্নির খবর সত্যি হলে সেটা উদ্বেগের। ঋণদাতা ব্যাঙ্কগুলিরও দুশ্চিন্তার কারণ আছে। টাকাগুলো সাধারণ মানুষের।’’
এ দিন মুখ থুবড়ে পড়েছে আদানি এন্টারপ্রাইজ়ের ফের শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া। ৪.৫৫ কোটি শেয়ার বেচতে নেমেছিল তারা। বিকিয়েছে মাত্র ৪.৭ লক্ষ। আদানিদের দাবি, শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া বানচাল করতেই ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছে হিন্ডেনবার্গ।