—প্রতীকী চিত্র।
আশা ও আশ্বাস ছিল যত দিন যাবে, মাথা নামাবে খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধি। কিন্তু তাতে জল ঢেলে গত মাসে প্রায় জানুয়ারির ৫.১ শতাংশের জায়গাতেই স্থির রইল ওই হার (৫.০৯%)। সঙ্গে চিন্তা বাড়ল খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ে। যা জানুয়ারির ৮.৩% থেকে কিছুটা
বেড়ে ফেব্রুয়ারিতে হল ৮.৬৬%। তার উপরে দেশের গ্রামগুলিতে গড় মূল্যবৃদ্ধির হারও শহরের ৪.৭৮ শতাংশের তুলনায় বেশি, ৫.৩৪%। যা গ্রামীণ অর্থনীতির দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানো নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলতে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।
ভোটের আবহে কেন্দ্রকে অস্বস্তিতে ফেলছে মূল্যবৃদ্ধি। অত্যাবশ্যক জিনিসের সঙ্গেই বিশেষত খাদ্যপণ্যের দামে নাভিশ্বাস মানুষের। যে কারণে চাল, ডাল, গম, পেঁয়াজের মতো খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের রাখতে মরিয়া কেন্দ্র রফতানিতে কড়াকড়ি-সহ নানা পদক্ষেপ করেছে। ঘোষণা করেছে সরকারি মজুত ভান্ডার থেকে খাদ্যপণ্য বিক্রির কথাও। অথচ তার পরেও বিভিন্ন মহলের সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, ফেব্রুয়ারিতে মাথাচাড়া দিয়েছে নিরামিষ থালির দাম। গত বছরের চেয়ে আমিষের দর কমলেও, জানুয়ারির চেয়ে বেশি। খোদ রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বলেছেন, দেশে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির হার এখনও তাঁদের ৪ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রার অনেকটা উপরে।
এই অবস্থায় সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত মাসে শস্যের দাম বেড়েছে ৭.৬%, আনাজের ৩০.২৫%, ডাল ও ডালজাত পণ্যের ১৮.৯০%, মশলার ১৩.৫১%। অতটা না বাড়লেও, মাছ-মাংস ও ডিমের ক্ষেত্রে দাম বৃদ্ধির হার যথাক্রমে ৫.২১% এবং ১০.৬৯%।
রেটিং সংস্থা ইক্রার মুখ্য অর্থনীতিবিদ অদিতি নায়ারের মতে, খাদ্যপণ্য ও পানীয় বাদে সমস্ত জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি মাথা নামানোর ছবি দেখা গিয়েছে। কমেছে জ্বালানি ও খাদ্য বাদে অন্যান্য পণ্যের দর বৃদ্ধির গতি (কোর ইনফ্লেশন)। যা হয়েছে ৩.৫%। ২০১৫ সালের জানুয়ারির পরে সব চেয়ে কম। যদিও অন্য অংশ মনে করাচ্ছেন, খুচরো মূল্যবৃদ্ধির প্রায় অর্ধেক জুড়েই থাকে খাদ্যপণ্য। ফলে তা মাথাচাড়া দিলে সামগ্রিক ভাবে দর বৃদ্ধির গতি রোখা কতটা সম্ভব, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে। কেন্দ্র অবশ্য দাবি করেছে, পেঁয়াজ থেকে শুরু করে টোম্যাটো— সব খাদ্যপণ্যের দরে রাশ টানতেই দ্রুত পদক্ষেপ করেছে তারা। ভবিষ্যতেও যাতে তা মাত্রা না ছাড়ায়, সে জন্য সব ব্যবস্থা নেবে। যদিও এত দিনের ব্যবস্থাতেও কেন কাজ হয়নি, সেই প্রশ্নও তুলছেন অনেকে।