—প্রতীকী চিত্র।
বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম ফের বাড়ছে। ব্রেন্ট ক্রুড ইতিমধ্যেই ব্যারেল পিছু ৮৫ ডলারের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। দেশ জুড়ে প্রশ্ন— এর ফলে ভারতে পেট্রল-ডিজ়েল বা রান্নার গ্যাসের দাম কমার যে সুযোগ তৈরি হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছিল কেন্দ্র, তা আপাতত মুছে যাবে কি? এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি আবার চড়া হারে বাড়িয়ে দিয়েছে বিমান জ্বালানি এটিএফের দাম। তাতে তেল ও রান্নার গ্যাসের দামে সুরাহা না মেলার আশঙ্কা বেড়েছে। এমনকি আগামী দিনে তা বাড়বে কি না, মাথা তুলেছে সেই চিন্তা। গৃহস্থের হেঁশেলে ব্যবহৃত রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের (১৪.২ কেজি) দাম কমানো হয়নি অগস্টেও। শুধু বাণিজ্যিক সিলিন্ডার (১৯ কেজি) ৯৩ টাকা মতো কমিয়ে একটু সুরাহা দেওয়া হয়েছে হোটেল-রেস্তরাঁগুলিকে। কলকাতায় যার দাম দাঁড়িয়েছে ১৮০২.৫০ টাকা।
বিশ্ব বাজারে তেলের দাম চড়তে না চড়তেই দেশে এটিএফের দাম বৃদ্ধি আশঙ্কাজনক ইঙ্গিত বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। তিন মাস তার দাম কিছুটা কমলেও, গত মাসে এক দফা বৃদ্ধির পরে এ মাসে বাড়ানো হয়েছে আরও প্রায় ৮.৫%। ফলে কলকাতায় উড়ান সংস্থাগুলিকে কিলোলিটার পিছু এটিএফ কিনতে হবে এক লক্ষের বেশি (১,০৭,৩৮৩.০৮) টাকায়। মাঝে বিমানের ভাড়া অস্বাভাবিক গতিতে বাড়ছিল। তাতে রাশ টানতে উড়ান সংস্থাগুলিকে বার্তা দেয় কেন্দ্র। তবে জ্বালানির খরচ বাড়লে সেই বার্তায় আদৌ কাজ হবে কি না, সে ব্যাপারে সংশয়ী প্রায় সব পক্ষই।
অথচ বিশ্ব বাজারে বেশ কিছু দিন ধরে অশোধিত তেলের দাম ৭০-৭৫ ডলার ছিল। বিরোধী-সহ সংশ্লিষ্ট মহলের ক্ষোভ, সেই সময়ে ভারতের মানুষ তার তেমন কোনও সুবিধা পাননি। বাণিজ্যিক সিলিন্ডার এবং এটিএফের দাম কখনও-সখনও কমলেও, কলকাতায় পেট্রলের লিটার ১০০ টাকার উপরে থমকে এক বছরের বেশি সময় ধরে। ডিজ়েলও ৯০ টাকার বেশি। বাজারে চড়া খাদ্যপণ্যের দামে নাভিশ্বাস ওঠা গৃহস্থের রান্নার গ্যাস কিনতেই বেরিয়ে যাচ্ছে হাজারের বেশি টাকা (কলকাতায় একটি সিলিন্ডার ১১২৯ টাকা)। তেলের চড়া দামের প্রভাব রয়েছে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতেও।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, রান্নার গ্যাসের বিষয়টি সাধারণ মানুষের আর্থিক সঙ্গতির সঙ্গে জড়িয়ে। বিশেষত এখন যেহেতু তাতে সরকারি ভর্তুকিও মেলে সামান্য। কলকাতায় প্রায় ১৯ টাকা। ডিজ়েলের দাম না কমলে আবার পণ্যের পরিবহণ খরচ কমে না। তাঁদের মতে, আনাজ থেকে শুরু করে সব কিছুর মূল্যবৃদ্ধিতে যে পরিবহণ খরচের বড় ভূমিকা আছে, তা কমানো সম্ভব ডিজ়েলের দাম কমিয়ে। যে কারণে ফের দাবি উঠেছে, কেন্দ্র শুল্ক কমিয়ে জ্বালানির দাম সস্তা হতে সাহায্য করুক। যাতে মূল্যবৃদ্ধি থেকে কিছুটা অন্তত বাঁচতে পারেন আমজনতা।