—প্রতীকী চিত্র।
পাল্লা দিয়ে ছুটছে সোনা এবং রুপো।
মাত্র এক দিনে কলকাতার বাজারে ১০ গ্রাম খুচরো পাকা সোনা (২৪ ক্যারাট) ৯০০ টাকা চড়ে গেল। শনিবার তা নজির গড়ে পেরোল ৭৫,০০০। তবে সোনাকে ছাপিয়ে গিয়েছে রুপোর দৌড়। এক দিনে এক কিলোগ্রাম খুচরো রুপোর দাম বেড়েছে প্রায় ৪০০০ টাকা। এই প্রথম তা পেরিয়ে গিয়েছে ৯০,০০০। দৌড়চ্ছে ৯১,০০০-এর দিকে। সংশ্লিষ্ট মহলের আশঙ্কা, রুপো শীঘ্রই এক লক্ষ টাকা ছোঁবে।
গয়না বিক্রেতাদের দাবি, এর ফলে গয়না কেনার খরচও লাফিয়ে চড়েছে। সোনা ফের বহু মানুষের নাগালের বাইরে। যাঁরা বাধ্য হয়ে রুপোর দিকে ঝুঁকছিলেন, তাঁরাও হতাশ। স্বর্ণশিল্পের সংগঠন ন্যাশনাল জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর সমর দে বলছেন, দৌড়ে ক্লান্ত সোনা মাঝে একটু জিরিয়ে নিতে মাথা নামিয়েছিল। সেই সুযোগে অনেকেই কেনাকাটা সেরেছেন। বছরখানেক পরের বিয়ে-অন্নপ্রাশনের জন্যেও গয়না বিকিয়েছে। যে কারণে এ বছর অক্ষয় তৃতীয়ায় ভিড় উপচে পড়ে। আশঙ্কা সত্যি করে তার পর থেকেই ফের ঊর্ধ্বমুখী সোনা। তাঁর কথায়, ‘‘আপাতত দাম কমার সম্ভাবনা দেখছি না। মাঝে-মধ্যে কিছুটা নামলেও নিট হিসাবে সোনার মুখ উপরের দিকেই থাকবে।’’ সোনা ব্যবসায়ী এবং জেজে গোল্ডের ডিরেক্টর হর্ষদ আজমেরার দাবি, ‘‘এখনও অস্থির ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামেনি। পশ্চিম এশিয়া উত্তপ্ত। মূল্যবৃদ্ধি পিছু ছাড়েনি। সুদ চড়া। এমন অনিশ্চিত সময়ে সুরক্ষিত সোনায় লগ্নি বাড়ছে বিশ্ব জুড়ে। তাই চড়ছে দাম। একই কারণ রুপোর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ভারতে তারই প্রভাব। লগ্নিকারীরা কিন্তু বিপুল রিটার্ন পাচ্ছেন।’’
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সোনার দাম তো বহু দিন ধরে চড়ছে। রুপোর গয়না-সহ বিভিন্ন পণ্য কিনতে আসা ক্রেতাদের বেশি থতমত অবস্থা। তাদের মতে, সোনা ওঠানামা করছিল। কিন্তু এক দিনে রুপো ৪০০০ টাকা দামি হয়ে যেতে পারে, এটা অনেকের চিন্তার বাইরে। ওয়েস্ট বেঙ্গল বুলিয়ন মার্চেন্টস অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি দীনেশ কাবরার মন্তব্য, ‘‘ঐতিহ্যগত ভাবে সোনার দাম বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে একটি নির্দিষ্ট অনুপাতে বাড়ে রুপোর দাম। সেই অনুযায়ী বর্তমানে সোনা যেখানে, তার প্রেক্ষিতে রুপোর ১ লক্ষ টাকার বেশি হওয়ার কথা। ফলে রুপোর দর আরও বাড়বে।’’