—প্রতীকী চিত্র।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের চড়া দামে এখনও নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। তবে পরিসংখ্যান বলছে, মূলত খাদ্যপণ্যের দাম মাথা নামানোর হাত ধরে টানা দু’মাস রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সহনসীমার মধ্যে (২%-৬%) রয়েছে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার। সেপ্টেম্বরের ৫.০২ শতাংশের পরে অক্টোবরে তা আরও কমে নেমেছে ৪.৮৭ শতাংশে। যা গত চার মাসে সব চেয়ে কম। এর আগে জুনেও ওই হার ছিল ৪.৮৭%।
পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট তো চলছেই, তার উপরে আগামী বছর দেশ জুড়ে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে জিনিসপত্রের চড়া দাম মাথাব্যথা হয়ে উঠেছে মোদী সরকারের। যে কারণে চাল, ডাল, গম, পেঁয়াজের মতো খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের রাখতে মরিয়া কেন্দ্র রফতানিতে কড়াকড়ি-সহ নানা পদক্ষেপ করেছে। ঘোষণা করেছে সরকারি মজুত ভান্ডার থেকে খাদ্যপণ্য বিক্রির কথাও। তবে তার পরেও সোমবার সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, সারা দেশে পেঁয়াজের গড় দাম এখনও কেজিতে ৫৯ টাকার বেশি।
সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মতে, এই অবস্থায় খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার ৫ শতাংশের নীচে নামা কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে কেন্দ্র ও মানুষকে। আশা, শীতে আনাজের ফলন বৃদ্ধির হাত ধরে তা আরও মাথা নামাতে পারে। যদিও অন্য অংশ বলছে, গত মাসে খাদ্যপণ্যের দাম যে হারে কমেছে তা নগণ্য (সেপ্টেম্বরের ৬.৬২% থেকে তা কমে ৬.৬১%)। গত বছর অক্টোবরে ৭%। বাজারে এখনও জিনিসের দাম চড়া। তা ছাড়া সম্প্রতি বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম আবার মাথা তুলেছে। ইজ়রায়েল-হামাস সংঘর্ষে অশান্ত পশ্চিম এশিয়া। সে ক্ষেত্রে তেলের দাম আরও বাড়লে মূল্যবৃদ্ধি ফের চড়বে কি না, সেই প্রশ্নও থাকছে। তার উপরে কিছু রাজ্যে এখনও ওই হার ৬ শতাংশের বেশি। ফলে এখনই নিশ্চিন্ত হওয়ার কারণ নেই।
এর পরেই উঠছে প্রশ্ন, টানা দু’মাস মূল্যবৃদ্ধি ৬ শতাংশের নীচে রয়েছে। এর ফলে ডিসেম্বরে কি সুদ কমানোর কোনও ইঙ্গিত আসবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটির কাছ থেকে? বিশেষত যখন খুচরো মূল্যবৃদ্ধিকেই সুদ স্থির করার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেয় তারা। যদিও মতিলাল অসওয়ালের মুখ্য অর্থনীতিবিদ নিখিল গুপ্ত, মূল্যায়ন সংস্থা ইক্রার অদিতি নায়ার বা কোটাক মহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের উপাসনা ভরদ্বাজের মতে, মূল্যবৃদ্ধি ফের ৫ শতাংশের উপরে পৌঁছতে পারে। সে ক্ষেত্রে দাম
নিয়ে হুঁশিয়ারি বজায় রাখবে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। পরের বছরের মাঝামাঝি গিয়ে সুদ কমাতে পারে তারা। উল্লেখ্য, শীর্ষ ব্যাঙ্কের পূর্বাভাস চলতি অর্থবর্ষে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে ৫.৪%।