—প্রতীকী চিত্র।
গত ২০১১-১২ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে দেশের পরিবারগুলির মাসিক খরচ বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। কমেছে গ্রাম ও শহরাঞ্চলে খরচের ক্ষমতার পার্থক্য। কিন্তু তারই মধ্যে আর্থিক ভাবে এগিয়ে থাকা অংশের সঙ্গে নিচু তলার অংশের ফারাক প্রকট। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রকের অধীনে থাকা ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভে অফিসের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে এই লক্ষণই স্পষ্ট হয়েছে।
২০২২ সালের অগস্ট থেকে ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিভিন্ন প্রান্ত এবং বিভিন্ন আর্থিক শ্রেণির ২,৬১,৭৪৬টি পরিবারে সমীক্ষা চালিয়ে রিপোর্টটি তৈরি হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, গত এক দশকে শহরাঞ্চলের পরিবারগুলির মাসিক গড় খরচ ২৬৩০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৪৫৯ টাকা (এখনকার খরচের ভিত্তিতে এবং সামাজিক প্রকল্প থেকে পাওয়া জিনিসপত্রকে হিসাবের বাইরে রেখে)। গ্রামাঞ্চলে তা ১৪৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৭৭৩ টাকায় পৌঁছেছে। আবার সামাজিক প্রকল্পে পাওয়া পণ্যকে হিসাবের মধ্যে রাখলে শহরে তা দাঁড়াচ্ছে ৬৫২১ টাকা। গ্রামে ৩৮৬০ টাকা। এই প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সামাজিক প্রকল্পের খরচ যোগ করে যে হিসাব দাঁড়াচ্ছে তা তেমন বেশি কিছু নয়। তবে এই সময়ের মধ্যে শহর ও গ্রামের পরিবারগুলির খরচের পার্থক্য ৮৩.৯% থেকে ৭১.২ শতাংশে নেমেছে। এই উন্নতিকে উল্লেখযোগ্য বলে মনে করছে কেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গে শহর এবং গ্রামে মাসিক পারিবারিক খরচের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৫২৬৭ টাকা এবং ৩২৪৯ টাকা। যা জাতীয় গড়ের চেয়ে কম।
তবে একই সমীক্ষা রিপোর্টে স্পষ্ট, গ্রামাঞ্চলে আর্থিক ভাবে নীচের তলার ৫ শতাংশের মাসিক খরচের ক্ষমতা আটকে রয়েছে ১৩৭৩ টাকায়। শহরেও তা মাত্র ২০০১ টাকা। যেখানে সবচেয়ে উপরের দিকের ৫ শতাংশের খরচ যথাক্রমে ১০,৫০১ টাকা এবং ২০,৮২৪ টাকা। এই ফারাক আসলে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রতি পাঁচ বছরে এক বার এই সমীক্ষা হওয়ার কথা। কিন্তু ২০১৭-র জুলাই থেকে ২০১৮-র জুনের রিপোর্ট প্রকাশ করেনি কেন্দ্র। দাবি করেছিল, ওই সময়ে দেশের মানুষের খরচের ধরনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। যদিও ফাঁস হয়ে যাওয়া রিপোর্টে স্পষ্ট হয়েছিল, ওই সময়ে খরচের ক্ষমতা আদতে কমেছে। সরকার অবশ্য তা স্বীকার করেনি।