ছবি: রয়টার্স।
পরিযায়ী শ্রমিকদের এমপ্লয়িজ় স্টেট ইনশিওরেন্স (ইএসআই) এবং কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ড (ইপিএফ) প্রকল্পের আওতায় আনার পক্ষে সওয়াল করল শ্রম বিষয়ক সংসদীয় কমিটি। সে জন্য এই দু’টি সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে সংস্থায় ন্যূনতম সংখ্যক কর্মীর বাধ্যবাধকতা এবং বেতনের উর্ধ্বসীমা তোলার প্রস্তাব দিল তারা। কমিটির প্রধান বিজেডি-র সাংসদ ভর্ত্রুহরি মহতাব বলেন, ‘‘সদস্যেরা চান, অংসগঠিত ক্ষেত্রের সমস্ত কর্মীর কাছেই আরও ভাল ভাবে সুরক্ষা প্রকল্পগুলি পৌঁছনো হোক। বিশেষত লকডাউনের পরে।’’ তাঁর দাবি, কেন্দ্রের এখন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
করোনার আবহে কোটি কোটি পরিযায়ী শ্রমিকের কেউ কাজ খুইয়ে মাইলের পর মাইল হেঁটে ঘরে ফেরার পথ ধরেছেন। কেউ রওনা দিয়েও আর নিজস্ব আস্তানায় ফিরতে পারেননি। বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়নের অভিযোগ, পরিযায়ীদের দুর্দশার ছবিটা করোনা চোখে আঙুল দেখিয়েছে। তবে বঞ্চনা তাঁদের বরাবরের সঙ্গী। শুধু যে ন্যূনতম বেতন কম তা নয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং ইএসআইয়ের সুবিধাও নেই। অথচ দেশের শ্রম আইন অন্যান্য শ্রমিকদের মতো পরিযায়ীদের ক্ষেত্রে সমান ভাবে প্রযোজ্য। এমনকি সেই নালিশ শোনার সরকারি ব্যবস্থাও কেন্দ্র বা রাজ্য স্তরে নেই। এই অভিযোগের মধ্যেই কমিটির প্রস্তাব তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের।
উল্লেখ্য, কোনও সংস্থায় অন্তত ১০ বা তার বেশি কর্মী থাকলে ইএসআই, অর্থাৎ সরকারি বিমার সুবিধা মেলে। তাঁরাই পান, যাঁদের আয় মাসে ২১ হাজার পর্যন্ত। কর্মীদের দিতে হয় বেতনের ১.৭৫%। সংস্থা দেয় ৪.৭৫%।
আবার যে সংস্থায় মাসে ১৫ হাজার টাকার কম বেতনের অন্তত ২০ বা তার বেশি কর্মী থাকেন, সেখানে ইপিএফ বাধ্যতামূলক। প্রকল্পে কর্মী ও সংস্থা পিএফ খাতে মাসে মূল বেতনের ১২% দেয়। জমা মোট টাকায় পিএফ কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট সুদ দেন। তবে অভিযোগ ওঠে বিশেষত অসংগঠিত ক্ষেত্রে ওই সুবিধা না-দিতে অনেক সময়েই ১৫ হাজারের সামান্য বেশি বেতন দেয় নিয়োগকারী।
প্রকল্প দু’টিতে কর্মী ও বেতনের এই সব সীমাই লোপের কথা বলেছে কমিটি। বুধবার কেন্দ্রের শীর্ষ কর্তাদের সামনে অতিমারিতে পরিযায়ীদের দুর্ভোগের বিষয়গুলি তুলে ধরার কথা তাদের। ইএসআই এবং ইপিএফ সংক্রান্ত প্রস্তাব পেশের কথা তখনই।