ফাইল চিত্র
বেসরকারি বিনিয়োগের জন্য কয়লার বাণিজ্যিক খননের দরজা হাট করে খুলে দেওয়ার কথা ২০ লক্ষ কোটি টাকার ত্রাণ প্রকল্পেই ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। তার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে বৃহস্পতিবার দেশের ৪১টি কয়লা ব্লকের অনলাইন নিলামের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যদিও তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের কোনও ব্লক নেই।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, কয়লার ভান্ডার হিসেবে ভারত বিশ্বে চতুর্থ। উত্তোলনে দ্বিতীয়। অথচ সেই দেশই কিনা পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কয়লা আমদানিকারী! এই অদ্ভুত বৈপরীত্য আসলে দশকের পর দশক কয়লা ক্ষেত্র বেসরকারি পুঁজি, উন্নত প্রযুক্তি থেকে বঞ্চিত থাকার কারণে। তাই এ দিনের পদক্ষেপকে কয়লা খননে সেই দীর্ঘ লকডাউন ওঠার সঙ্গে তুলনা করেছেন তিনি। দাবি করেছেন, এর দৌলতে আগামী দিনে বিশ্বের প্রথম সারির কয়লা রফতানিকারী হয়ে উঠতে পারে ভারত। সেই সঙ্গে লাভবান হবে ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়ামের মতো অন্যান্য শিল্প। ভিত মজবুত হবে ‘আত্মনির্ভর ভারতের’।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহেরও দাবি, শুধু এই ৪১টি কয়লা ব্লকে আগামী ৫-৭ বছরে লগ্নি আসবে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকার। তৈরি হবে প্রায় ২.৮ লক্ষ কাজের সুযোগও। সরকারের দাবি, জ্বালানির ক্ষেত্রে এই ‘যুগান্তকারী পদক্ষেপ’ ভোল বদলাতে সাহায্য করবে অর্থনীতির। তা আরও দ্রুত ছুটতে পারবে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হয়ে ওঠার লক্ষ্যে।
তবে গোড়া থেকেই সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় নেমেছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। কেন্দ্র যে ভাবে বেসরকারি পুঁজির জন্য কয়লা শিল্পের দরজা হাট করে খুলে দিচ্ছে, তার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে তারা। এমনকি এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে সঙ্ঘের শ্রমিক সংগঠন বিএমএস-ও। এ দিন কয়লা ক্ষেত্রের শ্রমিক সংগঠনগুলি জানিয়েছে, সরকারের এই পদক্ষেপের প্রতিবাদে কোল ইন্ডিয়া এবং এসসিসিএলে ২ জুলাই থেকে টানা তিন দিনের ধর্মঘট করবে তারা। যদিও দুই সংস্থার অফিসারেরা তাতে যোগ দেবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
কয়লা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হলেও, প্রধানমন্ত্রীর এ দিনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে শিল্প মহল। তাদের দাবি, এতে বহু শিল্পের সুবিধা হবে। চাঙ্গা হবে অর্থনীতি। নতুন লগ্নি এবং প্রযুক্তি— দুই-ই এর হাত ধরে আসবে বলে নিশ্চিত তারা।