প্রতীকী ছবি।
মোদী সরকার দাবি করেছে, ভারতের অর্থনীতি পোক্ত, দেশবাসীর রোজগার বাড়ছে এবং মাথা তুলছে কর্মসংস্থানের হার। কিন্তু সেই দাবিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই জানিয়েছে, অগস্টে দেশে বেকারত্বের হার জুলাইয়ের (৬.২৮%) থেকে বেড়ে ছুঁয়েছে ৮.২৮%। শহরে এবং গ্রামেও তা বেড়ে হয়েছে যথাক্রমে ৯.৫৭% এবং ৭.৬৮%। শেষ ৩০ দিনের গড় ধরলে ৩১ অগস্ট গোটা দেশে বেকারত্ব ৮.৩%, এক বছরে সর্বোচ্চ। শহর ও গ্রামে যথাক্রমে ৯.৭% ও ৭.৬%।
উদ্বেগের পরিসংখ্যান আরও আছে। সিএমআইই বলেছে, যে যুব-সম্প্রদায় আর্থিক বৃদ্ধির বৃহত্তম সূত্র, তাদেরই কাজের সুযোগ কমেছে। গত অর্থবর্ষে তাদের কর্মসংস্থানের হার ১০.৪ শতাংশে নেমে পাঁচ বছরে সর্বনিম্ন হয়েছে। অথচ ২০১৬-১৭ সালে ছিল ২০.৯%।
তার পরেই কেন্দ্রের সমালোচনায় মুখ খুলেছেন বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধী। বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারি দফতরগুলিকে ১০ লক্ষ খালি পদ পূরণ করতে বলেছিলেন। কিন্তু তারা কেউ যথাযথ পরিকল্পনা তৈরি করতে পারেনি। টুইটে তাঁর প্রশ্ন, লড়াই করে এগিয়ে চলা ওই তরুণ-তরুণীরা আর কত দিন অপেক্ষা করবেন?
আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্ত বলেন, চাকরির জন্য ভিড় বাড়ছে। কিন্তু চাকরি বাড়ছে না। বিশেষত শহরে। যে অর্থনীতি আয়ের সুযোগ দিতে পারে না, তা কোন অর্থে স্বস্তিদায়ক? তাঁর দাবি, ‘‘শিক্ষা শেষে কাজে যোগ দিতে না পারা মানে শিক্ষিত মানুষের কর্মক্ষমতার অপচয়। অবসরের বয়স ৬০ বছর। তাই চাকরি পেতে যত দেরি হবে, তত অপচয় হবে কর্মক্ষমতার। যা দেশের সব থেকে মূল্যবান সম্পদ। যুবসম্প্রদায়ের কাজের সুযোগ কমলে দেশের জিডিপি বৃদ্ধির প্রক্রিয়া মার খাবে।
একমত পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিক। তাঁর হুঁশিয়ারি, বেকারত্বের কারণে মানবসম্পদের অপচয় আখেরে সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই ভারতের মতো জনবহুল দেশের যুবসমাজকে শুধু চাকরির উপরে নির্ভর করে না থেকে স্বনির্ভর হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি। বলছেন, শিক্ষাগত ডিগ্রি অর্জন নয়, হাতেকলমে শিক্ষার প্রসার ঘটানো জরুরি।
সিএমআইই-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত মাসে বেকারত্বের হার বেড়েছে বেশ কিছু রাজ্যেও। পশ্চিমবঙ্গে তা ৬.৩% থেকে বেড়ে ৭.৪% হয়েছে। কাজের বাজারের পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর হরিয়ানা, জম্মু-কাশ্মীর ও রাজস্থানে। বেকারত্ব সেখানে ৩০% ছাড়িয়ে গিয়েছে।