গত আট মাস ধরে দেশের বাজারে স্থির পেট্রল-ডিজ়েলের দাম। কিন্তু তা এতটাই উঁচুতে উঠে রয়েছে যে, সমস্যা বহাল আমজনতার। যে কারণে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর বেশ খানিকটা নামায় ফের তেলের দাম কমানোর দাবি তুলছেন একাংশ। তবে শুক্রবার তেল মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, অশোধিত তেলের দর মাঝে বেড়েছিল। তবু রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণন সংস্থাগুলি মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণের রাখার জন্য এত দিন ধরে পরিবহণ জ্বালানির দর বাড়ায়নি। অথচ তাদের খরচ বেড়েছে। ফলে লোকসান গুনতে হয়েছে বিপুল। তাই তাদের জন্য কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের কাছে ক্ষতিপূরণ চাইবে তেল মন্ত্রক।
কলকাতায় আইওসি-র পাম্পে এখন পেট্রল বিকোচ্ছে লিটার পিছু ১০৬.০৩ টাকায়, ডিজ়েল ৯২.৭৬ টাকায়। বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল ব্রেন্ট ক্রুডের দাম অবশ্য বেশ কিছু দিন ধরেই ১০০ ডলারের নীচে। শুক্রবার রাতে ছিল ৮৫.৩০ ডলার। আর এক ধরনের অশোধিত তেল ডব্লিউটিআই ৮০ ডলারের আশেপাশে।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত আপাতত তেলের দাম কমছে না। ফলে আমজনতার সুরাহার প্রশ্ন নেই, যদি না কেন্দ্র উৎপাদন শুল্ক আরও কমায়। বরং ভোট মেটার পরে আগামী দিনে সংস্থাগুলি ফের দাম বাড়াবে কি না, সেই আশঙ্কা দানা বেঁধেছে একাংশের মনে। যদিও অশোধিত তেলের যে বাস্কেট থেকে ভারত আমদানি করে, জুনে ব্যারেলেতার দাম ছিল ১১৬ ডলার। এখন নেমেছে ৮৩ ডলারের কাছে।
গত এপ্রিল-সেপ্টেম্বরে ইন্ডিয়ান অয়েল, ভারত পেট্রোলিয়াম এবং হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়ামের মোট ক্ষতির পরিমাণ ছিল ২১,০০০ কোটি টাকারও বেশি। রান্নার গ্যাসের লোকসান বাবদ তেল মন্ত্রক এর আগে ২৮,০০০ কোটি টাকা চাইলেও সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রক ২২,০০০ কোটি দেওয়ার কথা জানায়। সেই অর্থ সংস্থাগুলি এখনও হাতে পায়নি। তবে তা হিসাবে যুক্ত হওয়ায় তেলের দাম বাবদ লোকসানের বহর আরও বাড়েনি তাদের। সূত্রের খবর, সেই অর্থ পেলে এবং চলতি অর্থবর্ষে সার্বিক ভাবে লোকসানের প্রাথমিক হিসাব কষার পরে অর্থ মন্ত্রকের দ্বারস্থ হবে তেল মন্ত্রক। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, তেল সংস্থাগুলি ক্ষতিপূরণ পেলে পাম্পে দর ছাঁটাইয়ের দাবি আরও জোরালো হবে দেশ জুড়েই।