রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। ফাইল চিত্র।
মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে যুঝতে গত মে থেকে সুদের হার মোট ১৯০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। ফলে বেড়েছে সাধারণ মানুষ-সহ শিল্প মহলের ঋণ নেওয়ার খরচ। এর বিরূপ প্রভাব সংস্থাগুলির বিক্রি ও নিট মুনাফার উপরে পড়তে শুরু করেছে দাবি করে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে ডিসেম্বরের পরবর্তী ঋণনীতিতে সুদ বৃদ্ধির গতিতে রাশ টানার আর্জি জানাল সিআইআই। সে ক্ষেত্রে তাদের দাবি, সুদ বাড়ানো হলেও, তা যেন ২৫-৩৫ বেসিস পয়েন্টের বেশি না হয়।
ভারতের পাশাপাশি আমেরিকা, ব্রিটেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ-সহ সারা বিশ্বে জিনিসের চড়া দামে জেরবার হচ্ছেন মানুষ। যাতে রাশ টানতে সুদের হার বাড়াচ্ছে দেশগুলি। ফলে মাথাচাড়া দিচ্ছে সরকারের ঋণের খরচ। এটা রাজকোষ ঘাটতি বৃদ্ধির আশঙ্কার অন্যতম কারণ বলে মনে করছে সিআইআই। সেই সঙ্গে ভারত থেকে বিদেশি পুঁজি বেরিয়ে যাওয়ার জেরে চলতি খাতে ঘাটতি বৃদ্ধির আশঙ্কাও করছে তারা। সংশ্লিষ্ট মহল আগেই বলেছে, আমেরিকায় সুদ বৃদ্ধির কারণে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি এ দেশ থেকে টাকা তুলে সেখানের সরকারি বন্ডে ঢালছে। ফলে ডলারের সাপেক্ষে টাকার দর নেমে চলেছে। বর্তমানে ডলারের দাম ঘোরাঘুরি করছে ৮২ টাকার আশেপাশে।
এ বছরের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ডগলাস ডব্লিউ ডায়মন্ডের যদিও মতে, টাকা-ডলারের বিনিময় মূল্য নিয়ে এমনিতে পূর্বাভাস দেওয়া মুশকিল। কিন্তু দেখা গিয়েছে আমেরিকায় অপ্রত্যাশিত চড়া হারে সুদ বাড়ানো হলে শক্তিশালী হয় ডলার। সেখানে কম হারে সুদ বাড়ানো হলে ভারতেও টাকার দর স্থিতিশীল হতে পারে বলে ধারণা তাঁর।
এখনও ভারতে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি রয়েছে আরবিআই-এর সহনসীমার (৬%) উপরে। পাইকারি বাজারেও দর সে ভাবে মাথা নামায়নি। উপরন্তু জ্বালানি এবং খাদ্য বাদে অন্যান্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ঘোরাফেরা করছে ৬ শতাংশের আশেপাশে। যা চিন্তার কারণ বলে জানিয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক।
বণিকসভাটির মতে, এই অবস্থায় দেশে চাহিদার হাত ধরে আর্থিক কর্মকাণ্ডে গতি বাড়ছে ঠিকই। কিন্তু সারা বিশ্বের অস্থির অর্থনীতির প্রভাব পড়ছে ভারতের উপরে। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে প্রায় ২০০০টি সংস্থার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে বছর ও মাসের সাপেক্ষে তাদের আয় এবং মুনাফা দুই-ই কমেছে। যে কারণে পরবর্তী ঋণনীতিতে কম হারে সুদ বাড়ানোর সওয়াল করেছে তারা।