ছবি পিটিআই।
জিএসটি ক্ষতিপূরণ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের টানাপড়েন শুরু হওয়ার পরে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ‘ভগবানের মার’ তকমা দিয়ে করোনার দোহাই দিয়েছিলেন। কিন্তু তার আগে থেকেই যে অর্থনীতির ঝিমুনির জেরে জিএসটি থেকে রাজ্যগুলির আয় কমতে শুরু করেছিল, তা ফের স্পষ্ট হল খোদ সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যানেই।
অর্থ মন্ত্রক আজ সংসদে প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছে, জিএসটি চালুর পরে প্রথম বছরে রাজ্যগুলিকে প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ মেটাতে হয়েছিল। দ্বিতীয় বছরে বেড়ে প্রায় ৬৯ হাজার কোটি হয়। তৃতীয় বছরে, অর্থাৎ ২০১৯-২০ সালে দাঁড়ায় তার প্রায় দ্বিগুণ, ১.২০ লক্ষ কোটি।
মন্ত্রক সূত্রের ব্যাখ্যা, অর্থনীতির ঝিমুনির ফলে বাজারে কেনাকাটা কমে যাওয়াতেই জিএসটি থেকে কেন্দ্র ও রাজ্যের আয় কমতে শুরু করে। রাজ্যগুলির তরফে আসতে শুরু করে বেশি পরিমাণে ক্ষতিপূরণের দাবি। কিন্তু কেন্দ্রেরও সেস বাবদ রোজগার কমে যাওয়ায় ক্ষতিপূরণ মেটাতে দেরি হচ্ছিল। অথচ করোনা ও তাকে যুঝতে দীর্ঘ লকডাউনের ধাক্কায় এপ্রিল থেকে অগস্ট, এই পাঁচ মাসে রাজ্যগুলির জিএসটি থেকে আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩০% কমেছে। পশ্চিমবঙ্গের আয় কমেছে প্রায় ৩৬%। এ দিকে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজকোষের যা অবস্থা, তাতে জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটাতে পারবে না কেন্দ্র। উল্টে রাজ্যগুলিকে ঘাটতি ভরতে ধার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে চরমে উঠেছে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত।
আরও পড়ুন: ৮ হাজার পুরোহিতকে ভাতা দেওয়ার ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
আরও পড়ুন: রাজ্যে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার পার, স্বস্তি দিচ্ছে সুস্থতার হার
তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের উত্তরে আজও অর্থ মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, এই অর্থবর্ষে সেস থেকে যথেষ্ট আয় হবে না বলেই ক্ষতিপূরণ মেটানো যাবে না। সংসদে পেশ হওয়া পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম চার মাস, এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের জন্যই কেন্দ্রকে প্রায় ১.৫১ লক্ষ কোটি ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া ৭৭৫০ কোটি। কিন্তু সেস খাতে আয় হয়েছে সব রাজ্যের বকেয়ার মাত্র পাঁচ ভাগের এক ভাগ। টাকার অঙ্কে ২৮,১৬৩ কোটি।
কংগ্রেস সাংসদ জ্যোতিমণির প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রক জানিয়েছে, এই আর্থিক বছরে ক্ষতিপূরণ বাবদ কেন্দ্র প্রায় ৬৫ হাজার কোটি টাকা মিটিয়েছে। কিন্তু তার সবটাই গত বছরের ক্ষতিপূরণ। এই অর্থবর্ষের এক মাসেরও মেটানো হয়নি।