NPA

ঋণ পুনর্গঠন সংস্থার প্রস্তাবে প্রশ্ন

এনপিএ উদ্ধারে এআরসিগুলি এখনও পর্যন্ত তেমন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারেনি বলে জানাচ্ছেন ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের একাংশ।

Advertisement

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

ব্যাঙ্কের ঘাড়ে এমনিতেই বিপুল অনুৎপাদক সম্পদের (এনপিএ) বোঝা। ওই খাতে আর্থিক সংস্থান করতে গিয়ে মুনাফা কমছে বা ক্ষতি হচ্ছে। আশঙ্কা, অতিমারির সময়ে দেওয়া রক্ষাকবচগুলি সরকার এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক ফিরিয়ে নিলে এনপিএ বাড়তে পারে। এই অবস্থায় ব্যাঙ্কগুলির হিসেবের খাতা পরিষ্কার করতে বাজেটে একটি ঋণ পুনর্গঠন সংস্থা (এআরসি) গড়ার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কিন্তু ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞদের দাবি, এমন সংস্থা তো আছে। তাতে যে তেমন সুফল মিলেছে, তা-ও নয়। যদিও সবক’টি বেসরকারি। তবু সেগুলিকেই দক্ষ ভাবে কাজে লাগাতে পারত সরকার। তা না-করে নতুন এআরসি গড়ার উদ্যোগ কেন, প্রশ্ন তাঁদের।

Advertisement

এআরসি ব্যাঙ্কের এনপিএ নিলামে কিনে সেই সম্পদ উদ্ধারের কাজ করে। পরিবর্তে ব্যাঙ্ককে অল্প টাকা নগদে মেটায়, বাকিটার জন্য দেয় রেভিনিউ রিসিট। এনপিএ উদ্ধার হলে রিসিটের টাকা মেটায়। রিসিট বিক্রিও হয়। কেনে মূলত অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড-সহ আরও কিছু লেনদেনকারী।

কিন্তু এনপিএ উদ্ধারে এআরসিগুলি এখনও পর্যন্ত তেমন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারেনি বলে জানাচ্ছেন ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের একাংশ। অভিযোগ, এনপিএ-র টাকা উদ্ধার বা বিক্রি করা কঠিন হচ্ছে বলেই তা কেনার ইচ্ছেয় ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ পাঁচটি ব্যাঙ্ক মিলে দেশের প্রথম এআরসি তৈরি করেছিল। নাম অ্যাসেট রিকনস্ট্রাকশন কোম্পানি অব ইন্ডিয়া লিমিটেড (আরসিল)। তার পরিচালন পর্ষদের সদস্য দেবব্রত সরকার বলেন, ‘‘দেশে এআরসি কম নেই। কিন্তু অনুৎপাদক সম্পদ উদ্ধারে তেমন সফল হয়নি। দেশে এখন যে আইন রয়েছে তার সাহায্যে এনপিএ উদ্ধারে প্রচুর সময় লাগে। দেউলিয়া আইনে এনসিএলটিতেও দ্রুত সমাধান হয় না। এই অবস্থায় নতুন এআরসি চালুর যুক্তি কী!’’ ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কের এগ্‌জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর কে রামচন্দ্রন বলছেন, ‘‘অনেক সময়ে একাধিক ব্যাঙ্ক মিলে বড় অঙ্কের ঋণ মঞ্জুর করে। সেগুলি এনপিএ হলে একাধিক এআরসি-র কাছে বেচা হয়। তখন পুরো বিষয়টির সমন্বয় সাধনও বড় সমস্যা।’’

Advertisement

তবে রামচন্দ্রনের মতে, কোনও ঋণ এনপিএ-তে পরিণত হলে সুদ বাবদ আয় তো হয়ই না, উল্টে তার জন্য সংস্থান করতে গিয়ে ব্যাঙ্কের মুনাফা কমে। অনেক ক্ষেত্রে বছর শেষে ক্ষতিও হয়। কিন্তু এনপিএ বিক্রি করলে সেই চাপ কমে। দেবব্রত এবং রামচন্দ্রন উভয়েরই বক্তব্য, পুরনো এআরসিগুলিকে মূলধন জুগিয়ে কাজে লাগালে আরও বেশি কাজ হত।

ব্যাঙ্ক ইউনিয়নগুলি অবশ্য কেন্দ্রের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দিহান। এআইবিইএ-র সভাপতি রাজেন নাগর ও আইবকের সম্পাদক সঞ্চয় দাস বলেন, ‘‘রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণের রাস্তা চওড়া করতে যে কোনও মূল্যে সেগুলির হিসেবের খাতা পরিষ্কার করতে চাইছে সরকার। তাই নয়া এআরসি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement