খাদ্য-পানীয়ের মোড়কে বাড়তি তথ্য চায় কেন্দ্র

নরেন্দ্র মোদী সরকারের নজরে এ বার স্বাস্থ্য সচেতনতা। সেই লক্ষ্যেই মিষ্টি জাতীয় ও মেদ বৃদ্ধি করতে পারে এমন প্যাকেটবন্দি খাবার, কোলা ধরনের পানীয় ইত্যাদিকে কড়া নিয়মের ঘেরাটোপে আনার প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্র।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৩৪
Share:

নরেন্দ্র মোদী সরকারের নজরে এ বার স্বাস্থ্য সচেতনতা।

Advertisement

সেই লক্ষ্যেই মিষ্টি জাতীয় ও মেদ বৃদ্ধি করতে পারে এমন প্যাকেটবন্দি খাবার, কোলা ধরনের পানীয় ইত্যাদিকে কড়া নিয়মের ঘেরাটোপে আনার প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্র। এ ধরনের খাবারের মোড়কে বা লেবেলে ফ্যাট-নুন-চিনির মতো উপাদান কতটা রয়েছে, তা বাধ্যতামূলক ভাবে জানাতে হবে বলে ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছে তারা। তবে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে কোমর বেঁধেছে এ ধরনের খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারকরা। কারণ নতুন নিয়মের জেরে ব্যবসায় টান পড়তে পারে, এই আশঙ্কাতেই কাঁটা ৫,৭০০ কোটি ডলার ব্যবসা করা এই শিল্প।

২০১৪ সালের তথ্য অনুযায়ী স্থূলতার নিরিখে বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম দেশ ভারত। ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে-র তথ্য বলছে দেশে পুরুষদের মধ্যে স্থুলতার সমস্যা তুলনায় বেশি। শহরে ১৯.৭% পুরুষ স্থুল। গ্রামে ১০.৬%। অন্ধ্রপ্রদেশ, পন্ডিচেরি ও সিকিমের ৩০% মানুষ স্থুল। মহিলাদের মধ্যে এই সমস্যা তুলনায় কম। এই সমস্যার সঙ্গে খাবার ও জীবনযাত্রার সরাসরি যোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে হু। মূলত ফ্যাট-যুক্ত খাবার খাওয়া ও অলস জীবনধারাকেই দায়ী করেছে তারা।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, চলতি মাসেই এ বিষয়ে খসড়া নীতি তৈরি হওয়ার কথা। ‘জাঙ্ক’ বা অস্বাস্থ্যকর খাবারের উপর ‘ফ্যাট ট্যাক্স’ বা কর আরোপ করার কথাও ভাবছে কেন্দ্র। ২০১৫ সাল থেকেই এ বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছিল। এখন তা দানা বাঁধছে। সম্প্রতি পেপসিকো প্রধান ইন্দ্রা নুয়িকে জনস্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকেও আলাদা ভাবে সংস্থাকে নরম পানীয়ে চিনির পরিমাণ কমানোর কথা বলা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, প্রস্তাবিত আইন রুখতে পেপসিকো, নেসলে ও আইটিসি-র মতো বহুজাতিক সংস্থার পদস্থ কর্তারা শিল্প সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠক করেন। সংগঠনের কাছে তাঁদের আর্জি, কেন্দ্র এই শিল্পের স্বার্থের কথাও বিবেচনা করুক। অল ইন্ডিয়া ফুড প্রসেসর্স অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, সদস্যদের নিয়ে দু’টি বৈঠক হয়েছে। সেখানেই আরও পুষ্টিকর খাদ্য কী ভাবে তৈরি করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি কড়া নিয়মকানুন সংক্রান্ত উদ্বেগও কেন্দ্রের কাছে তুলে ধরতে চায় তারা।

সরাসরি না-জানালেও, নতুন নিয়মকানুন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে নেসলে, পেপসিকো, কোকা কোলা ও ম্যাকডোনাল্ডসের মতো সংস্থা। কারণ ভারতের বাজারে সম্প্রসারণ করতে ইতিমধ্যেই মোটা লগ্নির পরিকল্পনা করেছে এ সব সংস্থা। ২০০৭ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দেশে ঠান্ডা-পানীয়ের বাজার বছরে ৩.৭% হারে বেড়েছে। ইউরো মনিটরের হিসেব বলছে ওই একই সময়ে প্যাকেটবন্দি খাবারের বাজার ৮% হারে বেড়েছে।

প্রস্তাবিত নীতি নিয়ে অবশ্য মুখ খোলেনি পেপসিকো। কোকা কোলার দাবি, গোটা বিষয়টির মূল্যায়ন চলছে। নেসলে কর্তৃপক্ষের দাবি, উৎপাদিত পণ্যের পুষ্টির মান বাড়ানোর প্রতি নজর দিচ্ছেন তাঁরা। অন্য দিকে সরকারের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়ার প্রধান পবন কুমার অগ্রবাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement