জিএসটির নয়া নিয়মে দামি হবে সস্তা ফ্ল্যাটই, অরুণ জেটলিকে চিঠি অমিত মিত্রের

এখন মধ্যবিত্তের ধরাছোঁয়ার মধ্যে থাকা তুলনায় কম দামের আবাসনে ৮% জিএসটি চাপে। কেন্দ্রের প্রস্তাব, তা কমিয়ে ৩% হোক। কিন্তু কাঁচামালে মেটানো কর ফেরতের (ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট) সুবিধা তুলে দেওয়া হোক।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৫৬
Share:

মুখোমুখি: কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। ফাইল চিত্র

জিএসটি চালুর জেরে ধাক্কা খেয়েছিল আবাসন। এই শিল্প ক্ষুব্ধ কেন্দ্রের উপরে। বিরোধীদের অভিযোগ, ভোটের আগে তাই প্রোমোটার বা আবাসন নির্মাতাদের ক্ষোভে জল ঢালতেই আবাসনের জিএসটি কাঠামোয় বদল আনতে চাইছে মোদী সরকার। কিন্তু তাতে মধ্যবিত্তদের সামর্থ্যের মধ্যে থাকা ফ্ল্যাটে করের বোঝা বাড়বে বলে আপত্তি তুললেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে চিঠি লিখেছেন তিনি। হিসেব কষে দেখিয়েছেন, কেন্দ্রের প্রস্তাবে দামি ফ্ল্যাটে জিএসটি কমবে। সস্তা ফ্ল্যাটে কর গুনতে হবে বেশি।

Advertisement

এখন মধ্যবিত্তের ধরাছোঁয়ার মধ্যে থাকা তুলনায় কম দামের আবাসনে ৮% জিএসটি চাপে। কেন্দ্রের প্রস্তাব, তা কমিয়ে ৩% হোক। কিন্তু কাঁচামালে মেটানো কর ফেরতের (ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট) সুবিধা তুলে দেওয়া হোক।

রবিবারই জিএসটি পরিষদের বৈঠক। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, তার আগে অমিতবাবুর চিঠিতে চাপে পড়েছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। ফলে পাল্টা যুক্তি তৈরির রাস্তা খুঁজতে হচ্ছে তাদের।

Advertisement

অমিতের সওয়াল

• ৪০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দামের ফ্ল্যাট-বাড়ির জিএসটির হার ১ শতাংশের নিচে বেঁধে রাখা হোক।
• ৪০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত দামের আবাসনের ক্ষেত্রে তা যেন ৫ শতাংশের উপরে না যায়।
• আর ১ কোটি টাকার বেশি দামেরগুলিতে করের হার হতে পারে ৭ শতাংশ।
• তুলে দেওয়া হোক মেট্রো ও অন্যান্য শহরের মধ্যে ফারাকও।

মন্ত্রীর দাবি

• আবাসনে জিএসটির হারে যে বদল আনতে চাইছে কেন্দ্র, তাতে মধ্যবিত্তদের সাধ্যের মধ্যে থাকা ফ্ল্যাটে করের বোঝা বাড়বে।
• পশ্চিমবঙ্গে ৭০ শতাংশ ফ্ল্যাট বাড়ির দাম ৪০ লক্ষ টাকার নীচে।

প্রথমে নোট বাতিল ও তার পরে জিএসটি, মোদী সরকারের দুই সিদ্ধান্তেই যারা সব থেকে বেশি ধাক্কা খেয়েছিল, তাদের মধ্যে অন্যতম আবাসন ক্ষেত্র। সেই কারণেই মোদী সরকার ভোটের আগে উপহার হিসেবে জিএসটি কমাতে চাইছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। অমিতবাবুর যুক্তি, আলোচ্যসূচির নোটেই বলা হয়েছে, এখন ‘ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট’-এর পর ৪৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দামের ফ্ল্যাটে বাস্তবে ১% কর চাপে। অথচ তা বাড়িয়ে সরকার ৩% করতে চাইছে। ফলে মধ্যবিত্ত মানুষকে ফ্ল্যাট কিনতে গেলে বেশি কর মেটাতে হবে। অমিতের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গে শতকরা ৭০ ভাগ ফ্ল্যাটের দাম ৪০ লক্ষ টাকার নিচে। এই তথ্য থেকেই স্পষ্ট, কেন্দ্রের প্রস্তাবে রাজ্যের সিংহভাগ ফ্ল্যাটের ক্রেতার উপর বোঝা চাপবে।

আরও পড়ুন: হেঁটে তিরুপতি দর্শন রাহুলের

উল্টো দিকে মাঝারি দামের ও বেশি দামের ‘প্রিমিয়াম ক্যাটেগরি’র ফ্ল্যাটে কীভাবে কেন্দ্রের প্রস্তাবে জিএসটি কমে যাবে, তা-ও ব্যাখ্যা করেছেন অমিত। তাঁর বক্তব্য, আলোচ্যসূচির নোট অনুযায়ীই এই ধরনের ফ্ল্যাটে যথাক্রমে ৫% ও ৭% জিএসটি চাপে। সরকারি প্রস্তাব কার্যকর হলে তা ৩ শতাংশে নামবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement