তাপপ্রবাহের জেরে কৃষি উৎপাদন মার খাওয়া, মূল্যবৃদ্ধি এবং ভূ-রাজনৈতিক অবস্থার দিকে চোখ রেখে পদক্ষেপ করতে হবে সরকারকে। প্রতীকী ছবি।
বিশ্ব ব্যাঙ্ক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক কিংবা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক— ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ভারতীয় অর্থনীতির সম্ভাবনা নিয়ে তিন পক্ষই মোটামুটি একমত। তাদের পূর্বাভাস, এ বছর আর্থিক বৃদ্ধির হার থাকতে পারে ৬.৫ শতাংশের আশেপাশে। বিশ্ব পরিস্থিতির নিরিখে ভারতীয় অর্থনীতি তুলনামূলক ভাবে বেশি গতিশীল। কিন্তু তা সত্ত্বেও মঙ্গলবার মার্চের আর্থিক রিপোর্ট প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের মন্তব্য, তাপপ্রবাহের জেরে কৃষি উৎপাদন মার খাওয়া, মূল্যবৃদ্ধি এবং ভূ-রাজনৈতিক অবস্থার দিকে চোখ রেখে পদক্ষেপ করতে হবে সরকারকে। রিপোর্টে বিভিন্ন ইতিবাচক দিকের কথা বলা হলেও এই সতর্কবার্তাকে তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। তাদের পর্যবেক্ষণ, মূল্যবৃদ্ধির হার মাথা নামিয়ে আর্থিক কর্মকাণ্ডের জমি কিছুটা পোক্ত হলেও প্রতিকূল আবহওয়া যথেষ্ট উদ্বেগে রেখেছে কেন্দ্রকে।
গত অর্থবর্ষে ভারতের বৃদ্ধির হার ৭% ছুঁয়ে ফেলতে পারে বলে সরকার-সহ বিভিন্ন মহল মনে করছে। রিপোর্টে আশা, নতুন অর্থবর্ষে বিশ্ব বাজারে চাহিদা বৃদ্ধির ফলে রফতানি বাণিজ্য গতিশীল থাকবে। সুবিধা দেবে নিয়ন্ত্রণে আসতে থাকা মূল্যবৃদ্ধি।
তবে এরই পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, আগামী কয়েক মাস সারা দেশে তাপপ্রবাহ তীব্রতর হতে পারে। সেই সময়ে কৃষি উৎপাদন কেমন হয় এবং বাজারে খাদ্যপণ্যের জোগানে তার কী প্রভাব পড়ে, তার উপরেও আগামী দিনে মূল্যবৃদ্ধির হার এবং আর্থিক কর্মকাণ্ড নির্ভর করছে। অর্থমন্ত্রকের রিপোর্টেও বলা হয়েছে, এল নিনোর ফলে সম্ভাব্য খরা পরিস্থিতি, ফসলের ক্ষতি এবং তার দাম বৃদ্ধি সামগ্রিক ইতিবাচক পরিস্থিতিতে জল ঢেলে দিতে পারে। তাই এ দিকে সতর্ক দৃষ্টি দিতে হবে। নজর রাখতে হবে ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকেও।
মূল্যবৃদ্ধি নিয়েও অবশ্য সার্বিক ভাবে আশার বার্তা শুনিয়েছে অর্থমন্ত্রক। জানিয়েছে, পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আসছে। পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার অনেকটা কমায় এখন তার প্রভাব ধীরে ধীরে পড়তে শুরু করেছে ভোগ্যপণ্যের দামেও। ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার উপরে সতর্ক নজর রয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের। তবে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, রিপোর্টের প্রধান তাৎপর্য লুকিয়ে রয়েছে তার সতর্কবার্তায়।