ফাইল চিত্র।
অবশেষে অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মরতদের তথ্য রাখার জন্য এল কেন্দ্রের পোর্টাল, ই-শ্রম। বৃহস্পতিবার সেটি চালু করলেন শ্রম এবং কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। সরকারের দাবি, এই ঘটনা ঐতিহাসিক। অসংগঠিত কর্মীদের তথ্য সংরক্ষণের এমন উদ্যোগ এই প্রথম। নির্মাণ প্রকল্পে নিযুক্ত কর্মী, পরিযায়ী শ্রমিক, রাস্তাঘাটে পণ্য বিক্রেতা, গৃহ সহায়িকা-সহ এই ক্ষেত্রের ৩৮ কোটি কর্মী নথিবদ্ধ হবেন এখানে। ভূপেন্দ্রর দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ই-শ্রম পোর্টালে নাম তোলা প্রত্যেকের জন্য ২ লক্ষ টাকা করে দুর্ঘটনা বিমা মঞ্জুর করেছেন।
সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের সম্পর্কে মোদী সরকারের হাতে যে তেমন কোনও তথ্য নেই সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে করোনা। বিশেষত গত বছর কেন্দ্র আচমকা লকডাউন ডাকায় দলে দলে পরিযায়ী শ্রমিকেরা মাইলের পর মাইল হেঁটে বাড়ি ফেরার পথ ধরার পরে। যাঁদের কেউ ফিরেছেন রুজি-রোজগার হারিয়ে বিধ্বস্ত অবস্থায়, কারও আর ফেরাই হয়নি পথে মৃত্যু হওয়ায়। অথচ এ ভাবে কত জন বিপর্যস্ত হয়েছেন বা বেঘোরে প্রাণ হারিয়েছেন তার কোনও হিসেব সরকার দিতে পারেনি বলে অভিযোগ ওঠে। ওই মহলের দাবি, তার পরেই জোরালো হয় অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মরতদের তথ্য সংরক্ষণের দাবি। চাপে পড়ে সরকারও।
ই-শ্রমে নথিভুক্তি শুরু হয়েছে এ দিনই। সরকারি মহলের দাবি, রাজ্য এবং কেন্দ্রকে অসংগঠিত কর্মীদের দরজায় বিভিন্ন সমাজ কল্যাণমূলক প্রকল্পের সুবিধাগুলি পৌঁছে দিতেও সাহায্য করবে এই পোর্টাল।
সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ই-শ্রম পোর্টালে নথিবদ্ধ কেউ দুর্ঘটনার কবলে পড়লে বিমার সুবিধা পাবেন। মৃত্যু হলে বা পুরোপুরি অক্ষম হলে দেওয়া হবে ২ লক্ষ টাকা। আংশিক ভাবে অক্ষম হলে ১ লক্ষ টাকা। জাতীয় টোল ফ্রি নম্বর ১৪৪৩৪-এ ফোন করে প্রয়োজনীয় খোঁজ-খবর নেওয়া যাবে। নথিভুক্তির পরে মিলবে ই-শ্রম কার্ড। যাতে থাকবে ১২ সংখ্যার একটি অভিন্ন নম্বর। কেন্দ্রের দাবি, সমাজ কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলিকে একসঙ্গে এক জায়গায় আনাও সরকারের লক্ষ্য। সে জন্য কর্মীদের বিশদ তথ্য দেওয়া হবে রাজ্য সরকার এবং দফতরগুলিকেও।
ই-শ্রমে নাম তুলতে লাগবে আধার নম্বর এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য। সংশ্লিষ্ট কর্মী কোন সামাজিক শ্রেণিভুক্ত, তাঁর জন্ম তারিখ, বসবাসের জায়গা ইত্যাদিও জানাতে হবে।