টাকা মার যাওয়া তো দূর অস্ত্। বরং ব্যাঙ্কে কষ্টে জমানো টাকা আরও সুরক্ষিত রাখতেই এই নতুন আইন আনার তোড়জোড় বলে দাবি করছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক।
অরুণ জেটলির মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, বড় মাপের কোনও ব্যাঙ্ক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হওয়ায় যাতে দেশের অর্থনীতি নড়বড়ে না হয়, তা নিশ্চিত করাই এই বিলের উদ্দেশ্য। ২০০৮ সালে আমেরিকায় নামী ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক লেম্যান বার্দার্স দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় যে ভাবে বিশ্বজোড়া মন্দা শুরু হয়েছিল, তেমন ঘটনা ভারতে হওয়া রুখতে চায় তারা।
আর আমজনতার টাকার সুরক্ষা প্রসঙ্গে মন্ত্রকের কর্তাদের যুক্তি, এখন ব্যাঙ্ক দেউলিয়া হলে এক লক্ষ টাকা নিশ্চিত ভাবে মেলার সুযোগ আছে। নতুন আইনে জোর দেওয়া হচ্ছে দেউলিয়া হওয়া আটকানোর উপরেই। অর্থাৎ, ব্যাঙ্ক যাতে দেউলিয়া না হয়, সে দিকে গোড়ায় নজর দেওয়া হবে।
• ব্যাঙ্ক কিংবা বড় কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হওয়ার কারণে যাতে দেশের অর্থনীতিতে ধস না-নামে, সেই লক্ষ্যেই এই বিল
• এতে বরং আরও বেশি সুরক্ষিত থাকবে গ্রাহকের টাকা। কারণ, ব্যাঙ্ক যাতে কোনও ভাবে দেউলিয়া না-হয়, এই বিলের খসড়া তৈরি সেই কারণেই
• এখন এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত নিশ্চিত ফেরতের বন্দোবস্ত আছে। তা বাড়ানোর পরিকল্পনা
• বহাল থাকবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে গচ্ছিত টাকায় কেন্দ্রীয় সরকারের অলিখিত গ্যারান্টি
• বিল রয়েছে সংসদীয় যৌথ কমিটির কাছে। সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনেই তাদের রিপোর্ট জমা পড়ার কথা
• ওই অধিবেশনেই বিল পাশ করাতে চায় সরকার। বাধা দিতে তৈরি বিরোধীরাও
• বিল নিয়ে আপত্তি রয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, আইআরডিএ, সেবি-র মতো নিয়ন্ত্রক সংস্থারও
তাঁদের কথায়, ফিনান্সিয়াল রিজলিউশন অ্যান্ড ডিপোজিট ইনশিওরেন্স (২০১৭)-এর খসড়া বিলে ফিনান্সিয়াল রিজলিউশন কর্পোরেশন (এফআরসি) তৈরির কথা বলা হয়েছে। আর্থিক স্বাস্থ্য বিচার করে তারাই বলবে ব্যাঙ্ক বিপদসীমার কাছে কি না। সে ক্ষেত্রে প্রথমে সরকার হস্তক্ষেপ করবে। তারপরেও দেউলিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থেকে গেলে, তবে ‘বেইল-ইনের’ প্রশ্ন। যদিও কত টাকা ফেরত মিলবে ও কী ভাবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘দেশের মানুষের আর্থিক সম্পদের ৬৩% ব্যাঙ্কে রয়েছে। বিমায় ১৯%, ব্যাঙ্ক ছাড়া অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৮%, ফান্ডে ৬% ও পেনশন তহবিলে ৪%। নতুন বিলে ব্যাঙ্ক-সহ সমস্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানেই আমানতে সুরক্ষার বন্দোবস্ত হচ্ছে।’’