জরুরি প্রয়োজনে অনেক সময়েই বাতিল করতে হয় ট্রেনের টিকিট। এ বার তাতেও বসছে কর। ফাইল চিত্র।
ট্রেনের টিকিট বাতিল করার খরচ বাড়ছে। জরুরি প্রয়োজনে টিকিট বাতিল করলে ক্রেতার কাছ থেকে এত দিন বাতিল-মূল্য বাবদ অর্থ নিত রেল। এ বার সেই মূল্যের উপর বসানো হবে জিএসটি। অর্থাৎ রেলকে বাতিলের মূল্য দেওয়ার পাশাপাশি সরকারকেও কর দিতে হবে টিকিট বাতিলকারীকে। যে টিকিটে তিনি ইতিমধ্যেই এক বার সরকারকে কর দিয়েছেন।
গত ৩ অগস্ট অর্থ মন্ত্রকের তরফে একটি সার্কুলার জারি করে এই ঘোষণা করা হয়েছে। সার্কুলারটি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রালয়ের ট্যাক্স রিসার্চ ইউনিট। ওই সার্কুলারে ট্রেনের নিশ্চিত হওয়া টিকিট বাতিলের পাশাপাশি হোটেলে ঘর সংরক্ষণ বাতিলেও কর বসানোর কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে কেন এই কর নেওয়া হবে, তার কারণও ব্যাখ্যা করেছে অর্থমন্ত্রক।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, ট্রেনের টিকিট সংরক্ষণ আসলে একটি চুক্তি। যা পরিষেবা প্রদানকারী অর্থাৎ ভারতীয় রেল এবং তার গ্রাহকের মধ্যে সম্পাদিত হয়। যখন গ্রাহক সেই টিকিট বাতিল করেন, তখন হিসেব মতো তিনি চুক্তি ভাঙছেন। এই চুক্তিভঙ্গের মূল্য হিসাবেই গ্রাহকের থেকে রেল সামান্য অর্থ নেয়। অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, যেহেতু রেলের নেওয়া এই বাতিল মূল্য পরিষেবা প্রদানকারীর সঙ্গে চুক্তিভঙ্গের কারণে হওয়া একটি লেনদেন, তাই এ ক্ষেত্রেও সরকারকে কর দিতে হবে। এই যুক্তিতেই টিকিট বাতিলের মূল্যের উপর পণ্য ও পরিষেবা কর বসানোর কথা বলা হয়েছে অর্থ মন্ত্রকের সার্কুলারে।
পাশাপাশি জানানো হয়েছে, ট্রেনের টিকিট কাটার সময় যে হারে কর দিতে হত ক্রেতাকে, টিকিট বাতিল করার সময়েও সেই একই হারে কর দিতে হবে। উল্লেখ্য, এত দিন ট্রেনের টিকিট কাটার সময় ৫ শতাংশ কর দিতে হত। টিকিটের ভাড়ার উপর ৫ শতাংশ হারে বসত পণ্য এবং পরিষেবা কর। অর্থ মন্ত্রকের নতুন নিয়মে সেই টিকিট বাতিল করলেও বাতিল মূল্যের উপর আবার ৫ শতাংশ হারে জিএসটি দিতে হবে।
ধরা যাক, ভারতীয় রেলের এসি ফার্স্ট ক্লাস বা প্রথম শ্রেণির শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বগির টিকিট সফরের ৪৮ ঘণ্টা আগে বাতিল করলে ২৪০ টাকা মূল্য নেয় রেল। এই টিকিট সংরক্ষণের সময় ক্রেতাকে ৫ শতাংশ জিএসটি দিতে হয়। আবার বাতিল করার সময় ওই ২৪০ টাকার উপরে আরও ৫ শতাংশ জিএসটি দিতে হবে বাতিলকারীকে। একই নিয়ম বজায় থাকবে এসি টু-টায়ার বা থ্রি টায়ার বা সাধারণ স্লিপার শ্রেণির কামরার টিকিটেও।
উল্লেখ্য, রেলের টিকিট সফরের আগে ১২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বাতিল করা হলে টিকিটের মোট দামের ২৫ শতাংশ নেওয়া হয় বাতিল-মূল্য হিসাবে। এখন থেকে তারই উপর বসবে পণ্য পরিষেবা কর।