মোবাইল ফোনে ‘কল-ড্রপ’ সমস্যা সংস্থা নির্বিশেষে দেশ জুড়ে ছড়ালেও বিএসএনএলের পরিষেবা নিয়ে আগে থেকেই গ্রাহক মহলে ক্ষোভ ছিল। যার নিট ফল, বেসরকারি সংস্থাগুলির চেয়ে গ্রাহক সংখ্যার বিচারে অনেকটাই পিছিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি। এ বছরও গত কয়েক মাসে ধারাবাহিক ভাবে কমেছে তাদের শাখা ক্যালকাটা টেলিফোন্স-এর মোবাইল গ্রাহক সংখ্যা। ঘুরে দাঁড়াতে তাই আজ, বৃহস্পতিবার থেকে ক্যালকাটা টেলিফোন্স ফের ‘মানিকজোড়’ প্রকল্পকে হাতিয়ার করতে চলেছে। যেখানে সংস্থার ল্যান্ডলাইনের সঙ্গে একটি মোবাইল ফোনের সংযোগ নিলে মিলবে কিছু সুবিধা।
ট্রাই-এর তথ্য বলছে, এ বছর মার্চে ক্যালকাটা টেলিফোন্সের গ্রাহক সংখ্যা ৭.৮৩ লক্ষ থাকলেও জুনে তা কমে হয় ৭.৫১ লক্ষ। জুলাইয়ে অবশ্য গ্রাহক বেড়েছে হাজার পাঁচেক। তবে অধিকাংশই প্রি-পেড। এয়ারটেল, টাটা, ভোডাফোন, আইডিয়া, এয়ারসেলের মতো সংস্থা সেই বিচারে অনেক এগিয়ে ক্যালকাটা টেলিফোন্স-এর চেয়ে।
২০০৭-এ মানিকজোড় প্রকল্পটি এনেছিল সংস্থা, যাতে ল্যান্ডফোনের গ্রাহকদের একই সঙ্গে একটি পোস্ট-পেড মোবাইল সংযোগ দিত তারা। মোবাইল সংযোগের জন্য ‘সিকিউরিটি ডিপোজিট’ ও সেটি চালুর জন্য মাসুল (অ্যাক্টিভেশন চার্জ) দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে তা দিতে না-হলেও মাসে একটি মাসুল দিতে হত। সেই ফোনটি থেকে ল্যান্ডলাইনে যত খুশি নিখরচায় ফোন করা যেত। তবে অন্য নম্বরে ফোন করলে আলাদা মাসুল দিতে হত। বছর তিনেক চলার পরে নতুন সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তবে যাঁরা তা নিয়েছিলেন, তাঁদের সংযোগ চালু আছে। সেই সূত্রে এখনও ক্যালকাটা টেলিফোন্স-এর প্রায় এক লক্ষ পোস্ট-পেড গ্রাহকের ৪০ শতাংশই ওই মানিকজো়ড় প্রকল্পের গ্রাহক।
সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার (বিপণন) শৈবাল গুপ্ত জানান, আজ থেকে ফের মানিকজোড় প্রকল্প চালু হচ্ছে। তবে মাসুল-ভাড়া ৪০ টাকা থেকে বেড়ে হচ্ছে ৭০ টাকা। এর সঙ্গে তাঁরা নিখরচায় ১৫ টাকার ‘টক ভ্যালু’ এবং ৫০ এমবি ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহারের সুযোগ পাবেন।
সংস্থা সূত্রের খবর, পোস্ট-পেড গ্রাহক সংখ্যা বাড়ানোও অন্যতম লক্ষ্য সংস্থার। কারণ গড় আয়ের বিচারে যে-কোনও টেলিকম সংস্থার কাছেই পোস্ট-পেড গ্রাহকদের কদর বেশি। সংস্থার আধিকারিকদের আশা, মানিকজোড়ে যেমন ল্যান্ডলাইনের গ্রাহককেও ধরে রাখা যাবে, তেমনই নতুন পোস্ট-পেড মোবাইল গ্রাহক সংখ্যাও বাড়বে।