তিন বছর পরে চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে ফের মুনাফার মুখ দেখতে পারে বার্ন স্ট্যান্ডার্ড। অন্তত সংস্থা কর্তৃপক্ষ এমনটাই আশা করছেন। এর আগে শেষ বার ২০১৩-’১৪ আর্থিক বছরে সংস্থা মুনাফা করেছিল ২ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা। উদ্বৃত্ত জমি বিক্রির পথে হেঁটে সংস্থার হাল ফেরানোর পরিকল্পনা পেশ করার পরে ফের অপারেটিং প্রফিট করার আশা তাই সংস্থার ঘুরে দাঁড়ানোর পথে আলো দেখাতে পারে বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ।
রাষ্ট্রায়ত্ত বার্ন স্ট্যান্ডার্ড ২৫৩ কোটি টাকার একটি পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনা জমা দিয়েছে রেল মন্ত্রকের কাছে। পাশাপাশি সংস্থার উৎপাদন বাড়িয়ে মুনাফার মুখ দেখতে উদ্যোগী কর্তৃপক্ষ। তবে অপারেটিং প্রফিট করলেও নিট মুনাফা এখনও দূর অস্ত্। কারণ, পুঞ্জীভূত লোকসান মুছে না-যাওয়া পর্যন্ত নিট মুনাফা করা সম্ভব নয় রাজ্যের ওয়াগন তৈরির ওই সংস্থার। উল্লেখ্য, সংস্থার নিট সম্পদে ৯০ কোটি টাকার ঘাটতি নিয়ে রুগ্ণ অবস্থায় ১৯৯৪ সালে বিআইএফআরে যায় বার্ন স্ট্যান্ডার্ড।
কীসের ভিত্তিতে চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে মুনাফা করা সম্ভব বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ? সংস্থার চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর এম এ আলম বলেন, ‘‘আমাদের হাতে ওয়াগন তৈরির মোটা অঙ্কের বরাত রয়েছে। পাশাপাশি ঢালাই ডিভিশনে উৎপাদন উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। এ ছাড়া ওয়াগন এবং জাহাজ সারাইয়ের ব্যবসা বাড়ানোর বড় মাপের পরিকল্পনাও আমরা করেছি। সব কিছু ঠিক মতো গুছিয়ে তুলতে পারলে চলতি আর্থিক বছরে বার্ন স্ট্যান্ডার্ড ফের ফের মুনাফার মুখ দেখতে পারবে বলে আমরা বিশ্বাস। যার সূচনা চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিক থেকেই হবে বলে আমার আশা।’’
এই মুহূর্তে দেশের বৃহত্তম ওয়াগন তৈরির সংস্থা বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের হাতে ২০০০ ওয়াগান তৈরির বরাত রয়েছে। যা সরবরাহ করতে পারলে সংস্থার ঘরে ৩০০ কোটি টাকা আসবে বলে জানান আলম। তবে তিনি বলেন, ‘‘অত ওয়াগন তৈরি করা সময় সাপেক্ষ। আমরা উৎপাদন দ্রুত বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছি। এপ্রিল মাসে বার্ন স্ট্যান্ডার্ড ৯৮টি ওয়াগন তৈরি করেছে। মে মাসে ১৫০টি ওয়াগন তৈরির লক্ষ্যমাত্রা আমরা
ঠিক করেছি।’’
আয়ের পথ করতে ওয়াগন তৈরির পাশাপাশি ওয়াগন সারানোর ব্যবসাও বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছেন বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কর্তৃপক্ষ। আলম জানান, চলতি বছরে ওয়াগন সারাইয়ের ১০০ কোটি টাকার বরাত তাঁদের হাতে এসে গিয়েছে। আরও ৫০ কোটি টাকার বরাত পাওয়ার জন্য তাঁরা চেষ্টা করছেন। এর সঙ্গে জাহাজ সারাইয়ের ২০ কোটি টাকার বরাতও রয়েছে বার্নের হাতে।
ঢালাই ডিভিশনের উৎপাদনও বাড়ানো হয়েছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। ইতিমধ্যেই গত এক বছরে উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০৩ টন। আলমের দাবি, গত ৩০ বছরের মধ্যে সংস্থার ঢালাই ডিভিশনে উৎপাদন
এতটা বাড়েনি।