আইন শিথিল করা নিয়ে আগেই আঙুল তুলেছে মূল্যায়ন সংস্থা ইকরা। এ বার পশ্চিমবঙ্গে নতুন আবাসন আইনের বিরুদ্ধে দিল্লিতে সরব হল ফ্ল্যাট-বাড়ি ক্রেতাদের সংগঠন। রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর কাছে তাদের অভিযোগ, কেন্দ্র যে আবাসন নিয়ন্ত্রণ আইন পাশ করেছে, তা লঘু করে দিয়ে রাজ্য সরকার প্রোমোটার-ডেভেলপার বা আবাসন নির্মাতাদের সুবিধা করে দিয়েছে। রাষ্ট্রপতির কাছে সংগঠনের আর্জি, ওই বিল রাজ্য অনুমোদনের জন্য পাঠালে, তিনি যেন সিলমোহন না দেন।
অসাধু প্রোমোটারদের দৌরাত্ম্য রুখতে ২০১৬ সালে আবাসন নিয়ন্ত্রণ আইন (রিয়েল এস্টেট রেগুলেশন অ্যাক্ট বা রেরা) আনে মোদী সরকার। যাতে ফ্ল্যাট-বাড়ি কেনাবেচায় স্বচ্ছতা আসে। ফ্ল্যাটের দাম ঠিক হয় ‘কার্পেট এরিয়া’র ভিত্তিতে। ‘সুপার বিল্ট এরিয়া’র মাপে নয়। নির্দিষ্ট সময়ে ফ্ল্যাটের চাবি হাতে পান ক্রেতারা।
কিন্তু বৃহস্পতিবার দিল্লিতে ক্রেতাদের সংগঠন ফোরাম ফর পিপল্স কালেক্টিভ এফোর্টস-এর সভাপতি অভয় উপাধ্যায়ের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিজস্ব দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল হাউসিং ইন্ডাস্ট্রি রেগুলেশন অ্যাক্ট এনে গত মাসে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। সেখানে এমন বেশ কিছু কড়াকড়ি শিথিল করা হয়েছে, যা কেন্দ্রের আইনে আছে। এ নিয়ে আপত্তি তাদের। এর আগে এই বিষয়গুলি চিহ্নিত করেছে ইকরাও।
এর মধ্যে চাবি দেওয়ার দিন ও গ্যারাজ সম্পর্কে উপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘দুই বদলই নির্মাতাদের স্বার্থরক্ষায়।’’ অনেক ক্রেতার আপত্তি আছে এই আইন ভাঙলে তার বিচার কোন আদালতে হবে, সে বিষয়ে রাজ্যের আইনের নীরবতা নিয়েও।
একই বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের দু’রকম আইন এক সঙ্গে থাকতে পারে কি না, তা আইন মন্ত্রককে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। উপাধ্যায় বলেন, ‘‘রেরা-র বদলে অন্য কিছু মানতে রাজি নই। পশ্চিমবঙ্গ নিজস্ব আইন বাতিল করে রেরা চালু করুক।’’
উপাধ্যায়ের প্রশ্ন, কেন কেন্দ্র এ বিষয়ে রাজ্যের উপর চাপ তৈরি করছে না? আবাসন মন্ত্রকের যুক্তি, রাজ্য এই আইনকে আবাসন শিল্প নিয়ন্ত্রণ আইন নাম দিয়েছে। তাই রাজ্যে এ সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি পাঠানোর সিদ্ধান্তও আপাতত মুলতুবি রেখেছে তারা।