বাজেটের পরে সংসদ থেকে বেরোচ্ছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সোমবার। পিটিআই
গত ন’মাস ধরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনের সঙ্গে পাঞ্জা কষছে ভারতীয় সেনা। বারবার উঠে আসছে সীমান্ত পরিকাঠামো, যুদ্ধ সরঞ্জাম, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, চূড়ান্ত প্রতিকূল আবহাওয়া মোকাবিলা করার রসদ নিয়ে ভারত এবং চিনের তুলনামূলক খতিয়ান। কৌশলগত বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভারত পিছিয়ে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর চিনের থেকে। এই অবস্থায় প্রত্যাশা ছিল, আজকের বাজেটে প্রতিরক্ষাখাতে ব্যয় বরাদ্দ যথেষ্ট পরিমাণ বাড়ানো হবে। কিন্তু দেখা গেল, গত বছরের তুলনায় তা বেড়েছে সামান্যই। প্রতিরক্ষা খাতে এ বছরের বরাদ্দ ৪.৭৮ লক্ষ কোটি টাকা। গত বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ ছিল ৪.৭১ লক্ষ কোটি টাকা। এই বরাদ্দের মধ্যে রয়েছে অস্ত্র ও সরঞ্জাম কেনার জন্য ১.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা, যা গত বাজেটে ধরা হয়েছিল ১.১৩ লক্ষ কোটি টাকা। পাকিস্তান এবং চিনের সঙ্গে নিরন্তর সংঘাতের নিরিখে এই বৃদ্ধি খুবই সামান্য বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল শিবির। পাশাপাশি গত বছর প্রতিরক্ষাকর্মীদের পেনশন খাতে বরাদ্দ হয়েছিল ১.৩৩ লক্ষ কোটি টাকা। এ বারে তা কমিয়ে করা হয়েছে ১.১৫ লক্ষ কোটি টাকা।
বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। তাঁর টুইট, ‘চিন আমাদের ভূখণ্ড দখল করে বসে রয়েছে এবং আমাদের সেনাদের মেরেছে। প্রধানমন্ত্রী সেনাদের সঙ্গে দিওয়ালি উদ্যাপন করেছিলেন ফটো অপ-এর জন্য। কিন্তু তিনি কেন তাঁদের জন্য প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়ালেন না?’
সাংবাদিক সম্মেলনে প্রতিরক্ষা বাজেটের স্বল্প বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বক্তব্য, ‘সব মিলিয়ে হয়তো বরাদ্দের পরিমাণটা কম দেখাচ্ছে, কিন্তু সামরিক পরিকাঠামো, যুদ্ধাস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে অর্থ ২০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।’ তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘গত তিন বছরে প্রতিরক্ষা খাতে যথেষ্ট খরচ করা হয়েছে। তা ছাড়া তিনটি সেনার উপপ্রধানদের হাতে ক্ষমতা দেওয়া রয়েছে, তাঁরা তাঁদের মতো করে প্রয়োজনে টাকা বরাদ্দ করতে পারেন। তার জন্য বাজেটে ঘোষণার প্রয়োজন নেই। এই ক্ষমতাও তাঁদের দেওয়া রয়েছে যে, টাকা খরচ না হলে, তা সরকারের কোষাগারে ফিরে যাবে না। তাঁদের কাছেই থাকবে।’’
প্রতিরক্ষা সূত্রের খবর, লাদাখে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পরে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে কুড়ি হাজার সাতশো ছিয়াত্তর কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে, যা বাজেট বহির্ভূত। এগুলি করা হয়েছে জরুরি প্রয়োজনের সাপেক্ষে।