প্রতীকী ছবি।
গত বছরের তুলনায় প্রায় ৬.১৩% বাজেট বরাদ্দ কমানো হল শিক্ষাখাতে। বিরোধীরা স্বভাবতই অখুশি। অভিযোগ, গত বছরে শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দের ৯৯ হাজার ৩১২ কোটি টাকার সবটা খরচ করা যায়নি। অবশ্য শেষ পর্যন্ত ‘রিভাইজ়ড এস্টিমেট’ হয় ৮৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকা। এ বছরের বাজেট বরাদ্দ ৯৩ হাজার ২২৪ কোটি টাকা।
সোমবার অর্থমন্ত্রী বাজেট ভাষণে জানান, জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করতে দেশের ১৫ হাজার স্কুলের পরিকাঠামো উন্নত করা হবে। ঘোষণা করেন, আদিবাসী এলাকায় ৭৫০টি একলব্য আবাসিক স্কুল তৈরি করা হবে। প্রতিটি একলব্য আবাসিক স্কুল তৈরির জন্য খরচ ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩৮ কোটি টাকা করা হবে। পাহাড়ি এলাকায় স্কুল তৈরির জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৪৮ কোটি।
এ দিন বাজেট বরাদ্দ কমানোর প্রতিবাদে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘করোনার পরে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় যখন খোলা হবে, তখন প্রচুর টাকার প্রয়োজন হবে। সেই টাকা কোথা থেকে আসবে?’’ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি পার্থিব বসুর বক্তব্য, বাজেটে কেন্দ্রীকরণের ছবি স্পষ্ট। এক দিকে বাজেট কমানো হয়েছে। অন্য দিকে ন্যশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন তৈরির কথা বলে দেশের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় গবেষণাকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘গবেষণাকে এ ভাবে বাছা যায় না।’’ সারা বাংলা সেভ এডুকেশন কমিটির সম্পাদক এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তরুণ নস্কর বলেন, ‘‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ সম্পর্কে আমাদের আশঙ্কাই সত্য হল। হায়ার এডুকেশন কমিশন অব ইন্ডিয়া গঠন করে শিক্ষার কেন্দ্রীকরণ হবে এবং তা শাসক দলের কুক্ষিগত হবে। ন্যাশনাল ডিজিটাল এডুকেশন আর্কিটেকচার গঠন করে অনলাইন শিক্ষা চালুর রাস্তা সুগম করা হবে।’’
এই বাজেটকে ভোট চমক বলে মত নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির (এবিটিএ) সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইনের। তিনি বলেন, ‘‘বামফ্রন্টের আমলেই জঙ্গলমহলে একলব্য স্কুল হয়। এটা নতুন নয়।’’ শিক্ষক সংগঠন আবুটা-র নেতা গৌতম মাইতি বলেন, ‘‘জাতীয় শিক্ষানীতিতে বলা হয়েছিল জিডিপি-র ৬% শিক্ষাখাতে বরাদ্দ হবে। অথচ দেখা গেল বাজেটে এক ধাক্কায় শিক্ষাখাতে বরাদ্দ অনেকখানি কমানো হল!’’
পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকারের মতে, ‘‘জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করতে রাজ্যের সঙ্গে কথা না বলেই স্কুলের পরিকাঠামোর উন্নতি করতে চাইছে। অথচ শিক্ষা যৌথ তালিকাভুক্ত।’’ বিজেপি শিক্ষা সেলের রাজ্য আহ্বায়ক দীপল বিশ্বাস বলেন, ‘‘জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করতে বাজেট ঘোষণাকে স্বাগত। জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করে স্কুলের পরিকাঠামো উন্নতি করলে রাজ্যের প্রচুর চাকরিও হবে।’’