—ছবি পিটিআই।
ভোট বড় বালাই। অর্থনীতি তার পরে!
এই পথে হেঁটেই শুক্রবার ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল সংসদে ‘রাজনৈতিক’ অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করেছেন বলে মত শিল্পমহলের অনেকের। তাঁর ‘জনদরদী’ এক গুচ্ছ প্রস্তাবকে সার্বিক ভাবে স্বাগত জানালেও শিল্পমহলের প্রশ্ন, প্রতিশ্রুতি পূরণের প্রয়োজনীয় টাকা আসবে কোথা থেকে?
এ দিন কৃষক, মধ্যবিত্ত-সহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের জন্য যে সব সুবিধা ঘোষণা হয়েছে, তাতে আমজনতার হাতে সাময়িক ভাবে বাড়তি টাকা আসতে পারে বলে মেনে নিয়েছে শিল্পমহল। বাড়বে চাহিদাও। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে তা ধরে রাখতে হলে লগ্নি ও শিল্পায়নে গতি আনা জরুরি বলে দাবি করেছে তারা। ভারত চেম্বারের প্রেসিডেন্ট সীতারাম শর্মা এবং সিআইআইয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের মতে, বিনিয়োগকে উৎসাহ দেওয়ার মতো কোনও পদক্ষেপ নেই বাজেটে।
ছোট চাষি, অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মী থেকে এক শ্রেণির করদাতাদের একগুচ্ছ সুবিধা দেওয়ার কথা বলেছেন গয়াল। ইন্ডিয়ান চেম্বার, মার্চেন্টস চেম্বার, অ্যাসোচ্যামের মতোই সেগুলিকে স্বাগত জানিয়েও দীপঙ্করবাবু ও বেঙ্গল চেম্বারের কর্তা সুনীল মিত্রের মতে, ভোটের কথা মাথায় রেখেই এই অন্তর্বর্তী বাজেট।
এমনিতে আর্থিক সুবিধা দেওয়া নিয়ে আপত্তি নেই শিল্পমহলের। কিন্তু দীপঙ্করবাবুর প্রশ্ন, সেই খরচের অর্থ কোথা থেকে আসবে? সিআইআইয়ের আর এক কর্তা সঞ্জয় বুধিয়ার মতে, তা জোগানের দিশা থাকলে ভাল হত। তাঁদের বরং আশঙ্কা, আয় বাড়াতে ভবিষ্যতে কর্পোরেট করের উপর চাপ বাড়তে পারে। বুধিয়ার মতে, কর্পোরেট কর কমলে সেই অর্থ নতুন লগ্নিতে কাজে লাগাতে পারত সংস্থাগুলি।
আইআইএম-কলকাতার অর্থনীতির অধ্যাপক পার্থ রায়ও সরকারের প্রস্তাবিত ব্যয় ও আয়ের মধ্যে এ দিন অন্তত সামঞ্জস্য খুঁজে পাননি। তিনি বলেন, ‘‘রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে সরকারের কোষাগারে কত ডিভিডেন্ড আসবে তা-ও এখনও অজানা।’’ সিআইআইয়ের কর্তা অলোক মুখোপাধ্যায়ের আশঙ্কা, রাজকোষ বা চলতি খাতে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনে ঘাটতির হিসেব দেখে আরবিআই সুদ না-ও কমাতে পারে।
সাধারণ মানুষের হাতে বাড়তি অর্থ এলে গয়না কেনার আগ্রহও বাড়বে, আশায় রয়েছে অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিল। তবে তাঁদের দাবিগুলি উপেক্ষিত থাকায় কিছুটা হতাশ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অনন্ত পদ্মনাভন।