শুক্রবার কলকাতার বাজারে ১০ গ্রাম পাকা সোনার (২৪ ক্যারাট) দাম এই প্রথম ছুঁল ৫৭,০০০ টাকা। প্রতীকী ছবি।
সামনের সপ্তাহেই শুরু হচ্ছে বিয়ের মরসুম। তার আগে শুক্রবার কলকাতার বাজারে ১০ গ্রাম পাকা সোনার (২৪ ক্যারাট) দাম এই প্রথম ছুঁল ৫৭,০০০ টাকা। জিএসটি নিয়ে ৫৯ হাজারের কাছাকাছি (৫৮,৭১০ টাকা)। ফলে গয়নার দামও বিপুল বেড়েছে। মাথায় হাত পড়েছে বহু ক্রেতার। বিপাকে ব্যবসায়ীরাও। স্বর্ণশিল্প মহলের দাবি, ব্যবসা হারিয়ে ঝাঁপ বন্ধ হতে বসেছে অনেক ছোট দোকানের। গয়নার বরাত কমায় কারিগরদের একাংশের কাজ গিয়েছে। কারণ, নিতান্ত প্রয়োজন না পড়লে ক্রেতা আসছেন না। অনেকে কেনাকাটার বরাদ্দ কমাচ্ছেন। বাড়ির গয়না বিক্রির ঝোঁকও বেড়েছে।
২০২০-র ৭ অগস্ট ৫৬,৯৬০ টাকায় উঠেছিল সোনা। এত দিন যা ছিল রেকর্ড। স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি সমর দে-র আশঙ্কা, অনিশ্চিত বিশ্ব বাজারের ধাক্কায় দাম আরও বাড়লে পরিস্থিতি ঘোরালো হতে পারে। ১৭ জানুয়ারি শুরু বিয়ের মরসুম। অনেকে হয়তো সোনা কিনতে বাধ্য হবেন। কিন্তু শুধু প্রয়োজনের কেনাকাটায় ব্যবসা চলবে না।
হলদিয়ার মাঝারি মাপের দোকানে শুক্রবার অন্নপ্রাশনে উপহার দেওয়ার জন্য গয়না কিনতে এসেছিলেন দূর্গারানি খাটুয়া ও যমুনা খাটুয়া। তাঁদের আক্ষেপ, “সম্মান রক্ষার জন্য সোনা না দিয়ে উপায় নেই। কিন্তু এত দাম। যা দেব ভেবে এসেছিলাম, সেটা টাকায় হল না।’’ পিসি চন্দ্র জুয়েলার্সের এমডি উদয় চন্দ্র জানান, “কেউ দাম কমার অপেক্ষা করতে চাইছেন। কেউ আরও বাড়ার আশঙ্কায় এখনই কিনছেন।’’তবে সিংহভাগই দোকানে যাচ্ছেন বিয়ে, অন্নপ্রাশনের মতো অনুষ্ঠানের চাপে পড়ে, দাবি হলদিয়া ও বনগাঁর মাঝারি মাপের দুই দোকানের মালিক মধুসূদন কোইলা ও বিনয় সিংহের।
দোকানে পা দিয়ে ফিরেও যাচ্ছেন অনেকে। যেমন, বনগাঁর সৌরভ বিশ্বাস জানান, “শখ করে আংটি কিনতে এসেছিলাম। আর প্রশ্ন ওঠে না। দাম কমলে ভাবব।’’ বৌবাজারের দোকানেনেকলেস দাম করছিলেন উত্তরপাড়ার গজু বসু। জানালেন, ‘‘বিবাহবার্ষিকীতে স্ত্রীকে উপহার দিতে কিনলাম। কিন্তু এত কম সোনা দিতে হবে ভাবিনি। জিনিসের দাম আগুন। বছরে ২-৩ বার গয়না কিনতাম। সেই দিন রইল না।’’
বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির দুই নেতা টগর পোদ্দার এবং সুব্রত করের মতে, “ছোট দোকান সমস্যায় পড়ছে বেশি। গয়নার চাহিদা কমায় কাজ হারিয়ে সমস্যায় পড়ছেন বহু কারিগর।’’