বিশেষজ্ঞদের মতে, দেউলিয়া আইনের লক্ষ্য শুধু বকেয়া ঋণ উদ্ধার নয়।
এ বার থেকে কোনও দেউলিয়া হয়ে যাওয়া সংস্থার ক্রেতা পাওয়া না গেলে, সেটি গুটিয়ে নেওয়ার আগে তার এক বা একাধিক অংশ বিক্রি করা যাবে। দেউলিয়া পর্ষদ সম্প্রতি এই মর্মে সংশ্লিষ্ট আইনটি সংশোধন করেছে। পরিবর্তিত নিয়মে বলা হয়েছে, শোধ করতে না পারা ঋণ মেটানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থায় নিযুক্ত কর্তৃপক্ষ (ইনসলভেন্সি প্রফেশনাল) সেখানকার সম্পত্তি আলাদা আলাদা ভাবে বেচে টাকা তুলতে পারবেন। দেউলিয়া সংস্থাটি গুটিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলাকালীন ঋণদাতাদের কমিটিও তার মালিক বা কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে বকেয়া ঋণের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে পারবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দেউলিয়া আইনের লক্ষ্য শুধু বকেয়া ঋণ উদ্ধার নয়। সেই সঙ্গে আর্থিক ভাবে ভেঙে পড়া সংস্থাটিকে বাঁচিয়ে রাখাও। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বহু ক্ষেত্রে ঋণের সমস্যা মেটাতে সংস্থাকে গুটিয়ে ফেলতে হচ্ছে। এতে এক দিকে যেমন সেখানকার কর্মীরা কাজ হারাচ্ছেন, তেমনই অন্য দিকে ব্যাহত হচ্ছে শিল্পের সম্প্রসারণ। তাঁদের মতে, নতুন ব্যবস্থায় অনেক সংস্থাকে গুটিয়ে না নিয়েও তার বকেয়া ঋণ চোকানো সম্ভব হবে।
ইনস্টিটিউট অব কোম্পানি সেক্রেটারিজ়ের প্রাক্তন কর্তা এবং দেউলিয়া আইন বিশেষজ্ঞ মমতা বিনানি বলেন, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে দেউলিয়া সংস্থা বিক্রির জন্য ক্রেতা পাওয়া যায় না। বহু ক্ষেত্রে আবার ক্রেতা এমন দরদাম করেন যে, সংস্থা বেচেও ধারের পুরো টাকা ওঠে না। নতুন ব্যবস্থায় সংস্থার এক বা একাধিক অংশ আলাদা আলাদা করে বিক্রির জন্য ক্রেতা পাওয়া সহজ হবে। ঋণদাতাদের টাকাও মেটানো যাবে। এর ফলে অনেক দেউলিয়া সংস্থা শেষ পর্যন্ত বেঁচে যাবে, বন্ধ করতে হবে না। কর্মীরাও রক্ষা পাবেন।’’ পরিসংখ্যান বলছে, দেউলিয়া আইন চালু হওয়ার পরে তার আওতায় গত জুন পর্যন্ত মোট ৩৭৪টি সংস্থাকে গুটিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৭১,৭৬৬.০৩ কোটি টাকা। কিন্তু গুটিয়ে নেওয়ার পরে আদায় হয়েছে মাত্র ২৯৩৬.৩০ কোটি টাকা।