এক দিকে হাতে তৈরি প্রথাগত পণ্যে বৈচিত্র্য আনা। অন্য দিকে সেগুলির গুণমান ও উপযোগিতা পরীক্ষার বন্দোবস্ত করা। রাজ্যের হস্তশিল্পকে আরও ছড়িয়ে দিতে এ বার এই জোড়া দাওয়াই প্রয়োগের পথেই হাঁটছে বিশ্ব বাংলা মার্কেটিং কর্পোরেশন (বিবিএমসি)।
হস্তশিল্প প্রসারের লক্ষ্যে প্রথম বার ক্ষমতায় আসার পরেই সংস্থাটি তৈরি করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। তৈরি হয় বিশ্ব-বাংলা ব্র্যান্ড। কিন্তু ছৌ নাচের মুখোশের মতো বাংলার সংস্কৃতির হাজারো নিদর্শনই হোক বা ডোকরা-টেরাকোটার ঘর সাজানোর জিনিস, প্রতিযোগিতা ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলেছে তাদেরও। বাজারে যখন হস্তশিল্প পণ্যের ছড়াছড়ি, তখন স্রেফ ঘরসজ্জার বৃত্তে আটকে থেকে যে ব্যবসা বাড়বে না, তা বিলক্ষণ বুঝেছে বিবিএমসি।
সে কথা মাথায় রেখেই এ বার জোড়া কৌশল নিয়ে বাজার দখলে ঝাঁপাচ্ছে বিবিএমসি। যার অঙ্গ হিসেবে হস্তশিল্পে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা হচ্ছে। জোর দেওয়া হচ্ছে ঘর সাজানোর বড় মাপের পণ্যগুলির ছোট সংস্করণ বানানোয়। ডোকরা, টেরাকোটার নানা জিনিস তৈরি হচ্ছে দৈনন্দিন প্রয়োজনে ব্যবহারের উপযোগী করে।
বিবিএমসি-র সিওও স্নেহাশিস সরকারের বক্তব্য, যাঁরা হয়তো ডোকরার ঘর সাজানোর জিনিস কিনতেন না, তাঁরা সেটা দিয়ে তৈরি প্রয়োজনীয় পণ্য কিনছেন। যেমন, মাদুরকাঠি ও শীতলপাটি দিয়ে তৈরি যোগ ব্যায়ামের ম্যাট কিংবা কাঠের চামচের উপর পটচিত্র ইত্যাদি। তাঁর মতে, বৈচিত্র্য বাড়লে চাহিদা বাড়বে। ডোকরার কাজের বরাতও বাড়বে।
শুধু বৈচিত্র্য নয়, গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে মান যাচাইয়েও। ডোকরার চামচ বা কাঁটা-চামচ বাজারে মিললেও, সেগুলি খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রে কতটা ব্যবহারযোগ্য, তা প্রশ্নাতীত নয়। বিবিএমসি-র দাবি, তাই পণ্যের গুণমান যাচাইয়ের মাপকাঠি স্থির করতে চাইছে তারা। এ জন্য ন্যাশনাল টেস্ট হাউসের মতো বিভিন্ন স্বীকৃত পরীক্ষাগারে সেগুলি পাঠাচ্ছে সংস্থা। স্নেহাশিসবাবুর দাবি, ‘‘ক্রেতারা এখন অনেক বেশি সচেতন। পণ্যের মান যাচাই করতে তাঁরাও আগ্রহী।’’