বিল গেটস। —ফাইল চিত্র।
ভারত এমনই একটি দেশ, যেখানে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো সম্ভব বলে সম্প্রতি সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেছেন মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। তা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। তাঁর এই বক্তব্য উস্কে দিয়েছে ২০০৯ সালের স্মৃতি। যখন গেটসের দাতব্য প্রতিষ্ঠান গেটস ফাউন্ডেশনের অসরকারি সংস্থা ‘প্রোগ্রাম ফর অ্যাপ্রেপ্রিয়েট টেকনোলজি ইন হেল্থ’(পাথ) ভারতে সার্ভাইকাল ক্যানসারের প্রতিষেধক তৈরির জন্য তেলঙ্গানা ও গুজরাতে পরীক্ষা (ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল) চালাচ্ছিল। অভিযোগ, সেখানে গাফিলতির ফলে মৃত্যু হয়েছিল সাত জন জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত স্কুল পড়ুয়া মেয়ের। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জেরে অসুস্থও হন বহু জন।
সমাজমাধ্যমে পডকাস্টে গেটস দাবি করেছেন, ভারত এমনই এক দেশ, যেখানে স্বাস্থ্য, পুষ্টি, শিক্ষার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্র উন্নত নয়। কিন্তু তাতে ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে ও স্থিতিশীলতা আসছে। সরকারের কোষাগারে এই খাতে ঢুকছে বিপুল অর্থ। সব মিলিয়ে ২০ বছরের মধ্যে ভারতে মানুষের জীবনযাপনে বড়সড় উন্নতি হতে পারে। এই প্রসঙ্গেই তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটা (ভারত) এমন একটি পরীক্ষাগার, যেখানে নানা বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা সম্ভব। যদি ভারতে সেটা সফল হয়, তা অন্যত্রও ছড়ানো যাবে।’’
গেটসের এই শব্দচয়ন নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনদের একাংশ। তাঁদেরই এক জন স্কটল্যান্ডের চর্ম চিকিৎসক ২০০৯-এর কথা বলেছেন। তখন আইসিএমআরের সঙ্গে মিলে তেলঙ্গানার খাম্মাম ও গুজরাতের বদোদরায় ১৪,০০০ জন জনজাতি নাবালিকার মধ্যে সার্ভাইকাল ক্যানসারের প্রতিষেধক নিয়ে কাজ করছিল পাথ। অভিযোগ উঠেছিল, জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে সচেতনতার অভাব থাকায় ও চিকিৎসার সুযোগ অপ্রতুল হওয়ার কারণেই তাঁদের বাছা হয়েছিল। সেই পরীক্ষায় অত অল্প বয়সি মেয়েরা অংশ নিলে কতটা কী ঝুঁকি থাকবে, সেই কথা তাদের পরিবারকে জানানো হয়নি। অভিভাবকের বদলে অনুমতিপত্রে সই করেছিলেন হোস্টেলের ওয়ার্ডেন।
এই বিষয়ে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করে পাথ-এর দাবি সংক্রমণ ও আত্মহত্যার কারণেমারা গিয়েছে সাত পড়ুয়া। এই অবস্থায় গেটসের মন্তব্যে ভারতের সম্ভাবনাময় দেশের প্রতি অবহেলাই উঠে এসেছে বলে অভিযোগ অনেকের।