টেলিনরের পরে এ বার তিকোনার ৪জি ব্যবসা কিনছে ভারতী এয়ারটেল। দেশে টেলিকম শিল্পে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে ঘর সামলাতেই তাদের এই সিদ্ধান্ত। এই মূহূর্তে ভারতের বৃহত্তম টেলি পরিষেবা সংস্থা এয়ারটেলের দাবি, এর ফলে বাজারে তথ্য বা ‘ডেটা’ পরিষেবার চাহিদা মেটানোর দৌড়ে এগিয়ে যাবে তারা। এখানে ইঙ্গিত স্পষ্ট, জিও-র হাত ধরে মুকেশ অম্বানীর ৪জি পরিষেবার ‘সুনামি’কে চ্যালেঞ্জ জানানো।
২০১০-এ পাঁচটি সার্কেলে (গুজরাত, রাজস্থান, হিমাচলপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ-পূর্ব, উত্তরপ্রদেশ-পশ্চিম) ৪জি পরিষেবার ২৩০০ মেগাহার্ৎজ ব্যান্ডের স্পেকট্রাম কেনে তিকোনা ডিজিটাল নেটওয়ার্কস। এ বার তাদের সেই স্পেকট্রাম ও ৩৫০টি টাওয়ার-সহ গোটা ৪জি ব্যবসাই কিনে নিচ্ছে এয়ারটেল। তবে রাজস্থানের ব্যবসাটি কিনবে এয়ারটেলের শাখা সংস্থা ভারতী হেক্সাকম। বিএসই-কে এ দিন এয়ারটেল জানিয়েছে, এই অধিগ্রহণের জন্য তাদের খরচ হবে প্রায় ১,৬০০ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, লেনদেনের অঙ্কের মধ্যে তিকোনা-র কিছু ধারও ধরা রয়েছে।
আরও পড়ুন: এয়ারটেলের দ্রুততম ৪জি নেটওয়ার্কের দাবি মিথ্যে, বলল জিও
গাঁটছড়া
• এয়ারটেল-টেলিনর
• এয়ারটেল-তিকোনা
• আইডিয়া-ভোডাফোন
• রিলায়্যান্স কমিউনিকেশন্স-এয়ারসেল
• রিলায়্যান্স কমিউনিকেশন্স-এমটিএস
গত বছর ৪জি পরিষেবা চালু করে রিলায়্যান্স-জিও। তারা গোড়ায় নিখরচায় ও পরে নামমাত্র খরচে নেট পরিষেবা দেওয়ার কথা জানানোর পরে আমূল বদলে গিয়েছে দেশের টেলিকম শিল্প। প্রতিযোগী সংস্থাগুলি এক প্রকার বাধ্য হয়েছে মাসুল হার কমিয়ে তাদের সঙ্গে পাল্লা দিতে। আর একই সঙ্গে লক্ষ্য রেখেছে কী ভাবে কয়েকটি সংস্থার পক্ষ থেকে জোট বেঁধে নিজেদের আরও শক্তিশালী করে জিও-কে চ্যালেঞ্জ ছোড়া যায়। তারই প্রতিফলন একের পর এক সংস্থার মেলবন্ধন।
এক সময়ে দেশে ছোট-বড় মিলিয়ে ১২-১৩টি টেলিকম সংস্থা থাকলেও এই শিল্পের অনেকেরই বক্তব্য ছিল, এত সংস্থা থাকলে তা কখনও ব্যবসায়িক ভাবে লাভজনক হতে পারে না। বিশ্বের উন্নত দেশগুলিতেও তিন-চারটি সংস্থাই মূল ব্যবসা করে। কার্যত জিও-র ধাক্কায় সেই ছবি এ বার ভারতেও।
টেলিনরের ব্যবসা কিনে স্পেকট্রাম, অপটিক্যাল ফাইবার কেব্লের মতো জরুরি পরিকাঠামো বাড়াতে চেয়েছে এয়ারটেল। এই ব্যবসা হাতে এলে এখনকার হিসেবে মোট ৩১.৪ কোটি গ্রাহক-সংখ্যায় পৌঁছবে তারা। অন্য দিকে, সম্প্রতি ভোডাফোন-আইডিয়া মিশে যাওয়ার কথা জানিয়েছে। যা কার্যকর হলে তাদের যৌথ উদ্যোগই থাকবে গ্রাহক সংখ্যার (প্রায় ৪০ কোটি) বিচারে শীর্ষে। আরও আগেই অবশ্য অনিল অম্বানীর রিলায়্যান্স কমিউনিকেশন্স এয়ারসেল ও এমটিএস কেনার কথা বলেছে। লক্ষ্য সবারই এক। মিলেমিশে যতটা সম্ভব শক্তিশালী হওয়া।