ঘুরে দাঁড়াতে পরিকল্পনা বেঙ্গল কেমিক্যালসের

ঝাঁপ বন্ধ নয়। বরং কিছু খাতে খরচ কমিয়ে ও বাজারে নতুন পণ্য এনে ঘুরে দাঁড়ানো। সব কিছু ঠিকঠাক চললে চলতি অর্থবর্ষেই নিট মুনাফার মুখ দেখার ব্যাপারে আশাবাদী বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস (বিসিপিএল)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৬ ০২:৪৬
Share:

ঝাঁপ বন্ধ নয়। বরং কিছু খাতে খরচ কমিয়ে ও বাজারে নতুন পণ্য এনে ঘুরে দাঁড়ানো।

Advertisement

সব কিছু ঠিকঠাক চললে চলতি অর্থবর্ষেই নিট মুনাফার মুখ দেখার ব্যাপারে আশাবাদী বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস (বিসিপিএল)। নিট মুনাফার পাশাপাশি এ বারই প্রথম ব্যবসার মাইলফলক ১০০ কোটি টাকা পেরোনোর বিষয়ে আশাবাদী তাঁরা। সংস্থার কর্তাদের দাবি, নতুন করে সাপে কাটার ওষুধ তৈরির জন্যও আটঘাট বাঁধছে তারা।

সোমবার বিসিপিএল-এর এমডি তথা ডিরেক্টর (ফিনান্স) পি এম চন্দ্রাইয়া-র দাবি, সংস্থার ব্যবসা বাড়ছে। বকেয়া আয়-ব্যয়ের হিসেব-নিকেশ তাঁরা সেরে ফেলেছেন গত বছরেই। এ বার দেশের সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার মধ্যে তাঁরাই প্রথম বার্ষিক সভায় গত অর্থবর্ষের হিসেব-নিকেশ পেশ করেছেন। তিনি জানান, ঘুরে দাঁড়াতে মূলত চারটি পদক্ষেপ করেছে সংস্থা:

Advertisement

• ঋণে সুদের হার এবং বিভিন্ন ‘চার্জ’ কমাতে ব্যাঙ্কের কাছে আর্জি। ব্যাঙ্ক তা মানলে সাশ্রয় হবে প্রায় ২ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় সরকারি ঋণে বছরে সুদ ১৭%, যা বাজার দরের চেয়ে বেশি। সুদ কমাতে এবং পুঞ্জীভূত সুদ বাবদ ৬৫ কোটি টাকা ছাড় দিতে কেন্দ্রের কাজে আর্জি জানিয়েছে সংস্থা। অর্থ মন্ত্রক মানলে বছরে বাঁচবে ২-৩ কোটি টাকা।

• কাঁচামালের জোগানে অনিশ্চয়তা এড়াতে বছরে একবার দরপত্র চাওয়ার বদলে এখন চাইছেন প্রতি ত্রৈমাসিকে। সরবরাহকারীদের সঙ্গে বৈঠকও করছেন, যাতে তাঁরা পাওনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় না-ভোগেন। ব্যবসার টাকা থেকে তাঁদের পাওনা সময়ে মেটাতে প্রয়োজনে ব্যাঙ্ক-গ্যারান্টিও দেবে বিসিপিএল। এই ব্যবস্থায় বছরে ৪-৫ কোটি টাকা সাশ্রয়ের আশা রয়েছে।

• ফাঁকা সম্পত্তি ভাড়া দিয়ে বছরে দেড় থেকে ২ কোটি টাকা আয় করা।

• সার্বিক ভাবে ব্যবসা বৃদ্ধি। এ জন্য কারখানাগুলির উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে গত কয়েক বছরে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ঢেলেছে সংস্থা।

কর্তারা জানান, ঘরদোর পরিষ্কার করার পণ্য তৈরিতেই সংস্থাটির দক্ষতা। সেটিকেই কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ধরনের আধুনিক সরঞ্জাম (কম্পিউটার, ট্যাবলেট ইত্যাদি) পরিষ্কারের জন্য নতুন পণ্য তৈরির ভাবনা রয়েছে তাঁদের। এ দিকে, সাপে কাটার ওযুধ তৈরির জন্য ঘোড়ার প্লাজমা প্রয়োজন। এখনও মানিকতলায় সংস্থার আস্তাবলে ৫০টিরও বেশি ঘোড়া রয়েছে। তবে ওষুধটি বাজারে আনতে দু’তিন বছর লেগে যাবে।

বাঙালিকে ব্যবসামুখী করতে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় ১৯০১-এ চালু করেন এই সংস্থা। প্রথম কারখানা মানিকতলায়। পরে এ রাজ্যের পানিহাটি এবং মুম্বই, কানপুরেও কারখানা তৈরি হয়। সংস্থাটির ১৯৭৭ সালে জাতীয়করণ হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গরিমা হারিয়ে ১৯৯২-তে রুগ্‌ণ সংস্থা হিসেবে বিআইএফআরে চলে যায় বিসিপিএল।

দেশের প্রথম রাসায়নিক ও ওষুধ তৈরির সংস্থাটির ভবিষ্যৎ নিয়ে আশা-নিরাশার দোলাচলে নতুন করে ইন্ধন জুগিয়েছে কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প মন্ত্রকের সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তি। তাতে সমস্ত রুগ্ণ কেন্দ্রীয় সংস্থাকে নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রূপরেখা জানাতে বলা হয়। চন্দ্রাইয়া জানান, সংস্থা বন্ধের কোনও নির্দেশ তাঁরা পাননি। তবে ওই বিজ্ঞপ্তি পেয়েছেন। দিন দু’য়েকের মধ্যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠিও দেবেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement